Advertisement
০২ মে ২০২৪
কালীগঞ্জ

ছাড় দেওয়া হোক বাজারের জায়গা, আর্জি ব্যবসায়ীদের

প্রায় তিন দশক ধরে দোকানপাট চালিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু দিন কয়েক আগে তাদের জানিয়ে সেই জায়গা ঘিরে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করে বন দফতর। এর ফলে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন এমন দাবি জানিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্গাপুরের কালীগঞ্জ মোড় ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের আর্জি, দোকান-বাজারের জায়গাটুকু ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, দুর্গাপুর-ফরিদপুরের বিডিও-র কাছে এ ব্যাপারে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

বন দফতরের নোটিস।

বন দফতরের নোটিস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২১
Share: Save:

প্রায় তিন দশক ধরে দোকানপাট চালিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু দিন কয়েক আগে তাদের জানিয়ে সেই জায়গা ঘিরে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করে বন দফতর। এর ফলে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন এমন দাবি জানিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্গাপুরের কালীগঞ্জ মোড় ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের আর্জি, দোকান-বাজারের জায়গাটুকু ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, দুর্গাপুর-ফরিদপুরের বিডিও-র কাছে এ ব্যাপারে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল রোডের দু’পাশে কালীগঞ্জ মোড়ে দোকান গড়ে ব্যবসা করছেন। রাস্তার দক্ষিণ দিকের জমি তাদের বলে সম্প্রতি বোর্ড লাগিয়েছে বন দফতর। খুঁটি দিয়ে বন দফতরের জায়গা ঘিরে ফেলার প্রক্রিয়াও শুরু করেছেন কর্মীরা। তাতে শ’খানেক ব্যবসায়ী বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ। বই-খাতার দোকান চালান কৃষ্ণকান্ত গোস্বামী। তিনি বলেন, “বন দফতর জায়গা ঘিরে নিলে আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু আমাদের আর কোনও রুটি-রুজির ব্যবস্থা নেই। পরিবার নিয়ে বিপদে পড়ে যাব।” ব্যবসায়ী চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সবাই স্থানীয় কালিগঞ্জ, শঙ্করপুর, টেটিখোলা এলাকার বাসিন্দা। প্রায় তিন দশক আগে আমরা কালীগঞ্জ মোড়ে দোকান বসিয়েছি। এখন হঠাত্‌ তা বন্ধ হয়ে গেলে রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। অন্য কোনও জায়গাও জানা নেই যেখানে আবার দোকান খুলতে পারব।”

ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা লোকনাথ দে, পরেশচন্দ্র প্রামাণিকরা জানান, অধিকাংশ ব্যবসায়ীই স্থানীয় জেমুয়া পঞ্চায়েত থেকে নির্দিষ্ট লাইসেন্স নিয়ে সরকারি নিয়ম মেনে ব্যবসা করছেন। তাঁরা বলেন, “আমরা জানতাম না যে জায়গাটি বন দফতরের। শুধু দোকানগুলি বাদ দিয়ে বাকি জায়গা বন দফতর ঘিরে নিক। তা না হলে আমাদের সবার ব্যবসা গুটিয়ে যাবে। বিষয়টি বিবেচনার আর্জি জানিয়ে মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়েছি।”

ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মহকুমাশাসককে চিঠি পাঠিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। কালিগঞ্জ মোড়, বিবেকানন্দ পার্ক ইত্যাদি এলাকার বাসিন্দারা দাবি করেছেন, তাঁরা কালীগঞ্জ মোড়ের বাজার থেকে নিত্য জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন। এলাকার অন্য বাজারগুলি তিন-চার কিলোমিটার দূরে। এ ছাড়া সপ্তাহে দু’দিন, মঙ্গল ও শনিবার হাট বসে। স্থানীয় বাসিন্দা মিন্টু দে, ভোলানাথ বাউড়িরা বলেন, “সব দিক বিবেচনা করে বাজারটি যাতে চালু থাকে, সে ব্যবস্থা করার জন্য মহকুমাশাসকের কাছে আর্জি জানিয়েছি আমরা।”

বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, যা করার আইন মেনেই তা করা হয়েছে। দফতরের এক আধিকারিক জানান, ১৯২৭ সালের বন আইন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ১৯৭২ অনুযায়ী বন বিভাগের নির্দিষ্ট জায়গা দখল করা বেআইনি। তা জামিন অযোগ্য অপরাধ। সে কথা জানিয়ে বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে এলাকায়। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “ব্লক প্রশাসনের রিপোর্ট পেলে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের আর্জির বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

durgapur market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE