Advertisement
০২ মে ২০২৪
আর্জি উচ্চ শিক্ষা দফতরে

জমি পড়ে তিরিশ বছর, কলেজ না হওয়ায় ক্ষোভ

এলাকায় স্কুল তৈরির জন্য বছর তিরিশেক আগে জমি দিয়েছিল শ’খানেক পরিবার। সেই জমির একাংশে স্কুল তৈরি হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন কেটে গেলেও কাঁকসার কুলডিহা গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী বাকি জমিতে এখনও ডিগ্রি কলেজ তৈরি হয়নি। এর জেরে আদিবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকার পড়ুয়ারা উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ।

কাঁকসার কুলডিহায় পড়ে রয়েছে এই জমি। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।

কাঁকসার কুলডিহায় পড়ে রয়েছে এই জমি। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০১:৩৬
Share: Save:

এলাকায় স্কুল তৈরির জন্য বছর তিরিশেক আগে জমি দিয়েছিল শ’খানেক পরিবার। সেই জমির একাংশে স্কুল তৈরি হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন কেটে গেলেও কাঁকসার কুলডিহা গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী বাকি জমিতে এখনও ডিগ্রি কলেজ তৈরি হয়নি। এর জেরে আদিবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকার পড়ুয়ারা উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে দরবার করেছেন বাসিন্দারা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

কাঁকসার আদিবাসী অধ্যুষিত কুলডিহা গ্রাম ও লাগোয়া এলাকায় কোনও স্কুল ছিল না। তাই বছর তিরিশ আগে ১২ বিঘা জমি দান করেন ঢেনা হাঁসদা, ছবি হেমব্রমদের মতো অনেকে। ১৯৮৪ সালে তৈরি হয় প্রাথমিক স্কুল। ২০০৯ সালে ওই জমির ৪ বিঘার উপর তৈরি হয় মাধ্যমিক স্কুল। কিন্তু তার পরে দীর্ঘ ছ’বছর কেটে গেলেও বাকি আট বিঘা জমি এখনও পড়ে রয়েছে। সেখানে কলেজ তৈরির জন্য আবেদন করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। কাঁকসা ব্লকে সাতটি পঞ্চায়েতে গ্রামের সংখ্যা ১০৩। ব্লকে রয়েছে ৭০টির বেশি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, একশোর বেশি প্রাথমিক স্কুল, দু’টি জুনিয়র হাইস্কুল, চারটি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র, ১৬টি হাইস্কুল যার অর্ধেক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের। এ ছাড়া রয়েছে বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট, আইন, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। কিন্তু কোনও ডিগ্রি কলেজ নেই। এর জেরে উচ্চ মাধ্যমিকের পরে পড়ুয়াদের ছুটতে হয় দুর্গাপুর, মানকর, গলসি, বোলপুর অথবা বর্ধমানের কলেজগুলিতে। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার অনেক পড়ুয়াই যাতায়াতের সমস্যা ও আর্থিক অনটনের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন বলে গ্রামবাসীরা জানান।

সম্প্রতি কাঁকসার বিদবিহার, গোপালপুর, মলানদিঘি, দুর্গাপুর-ফরিদপুরের প্রতাপপুর এলাকার বাসিন্দারা কলেজ চেয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেন। আবেদনকারীদের তরফে সুনীল সোরেন বলেন, “কুলডিহায় কলেজটি তৈরি হলে আমাদের এলাকায় মধ্যে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটবে।” কুলডিহার বাসিন্দা নন্দদুলাল ঘোষাল, বরুণ ঘোষালদের দাবি, কলেজ গড়তে যদি ৮ বিঘার বেশি জমি লাগে, তারও ব্যবস্থা করতে রাজি আছেন বাসিন্দারা। কলেজের সমর্থনে বিদবিহার এলাকায় স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানও করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা গিরিধারী সিংহ বলেন, “কুলডিহায় কলেজ গড়ে উঠলে কাঁকসা ছাড়াও পাশের জেলা বীরভূমের জয়দেব অঞ্চলের পড়ুয়ারাও উপকৃত হবেন। আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কলেজ তৈরির আবেদন পৌঁছে দিতে চাই।”

গ্রামবাসীদের আবেদনে সাড়া মিলেছে প্রশাসনের তরফে। ইতিমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের দফতর জেলা প্রশাসনকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে বলে খবর। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানান, কলেজ তৈরির জন্য মহকুমাশাসকের রিপোর্ট-সহ একটি লিখিত আর্জি পাঠানো হয়েছে উচ্চ শিক্ষা দফতরে।

কবে সাড়া মেলে, সে দিকেই চেয়ে কাঁকসার মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kudiha kaksa college land
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE