Advertisement
১৭ মে ২০২৪

জল সরবরাহ বন্ধ, সমস্যা বারাবনিতে

পাইপলাইন নেই। তাই ট্যাঙ্কে করে জল সরবরাহ করার কথা প্রশাসনের। কিন্তু সেই জলও আসছে না বলে অভিযোগ। ফলে, প্রখর গরমে তীব্র জলকষ্টে ভুগছেন বারাবনির পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। বারবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও সমস্যা মিটছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস অবশ্য জানান, এ ব্যাপারে শীঘ্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জলের আশায়। বারাবনিতে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

জলের আশায়। বারাবনিতে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বারাবনি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০০:২০
Share: Save:

পাইপলাইন নেই। তাই ট্যাঙ্কে করে জল সরবরাহ করার কথা প্রশাসনের। কিন্তু সেই জলও আসছে না বলে অভিযোগ। ফলে, প্রখর গরমে তীব্র জলকষ্টে ভুগছেন বারাবনির পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। বারবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও সমস্যা মিটছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস অবশ্য জানান, এ ব্যাপারে শীঘ্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকেই পানীয় জলের সঙ্কট শুরু হয়ে যায় বারাবনির বিস্তীর্ণ এলাকায়। প্রতি বারই এপ্রিলের গোড়া থেকে ওই সব নির্জলা অঞ্চলে ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে ট্যাঙ্কে করে জল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এ বার এখনও তা শুরুই হয়নি। এ দিকে তীব্র গরমে এলাকার পুকুর, ডোবা, কুয়ো শুকিয়ে কাঠ। অজয় থেকে যাঁরা জল আনেন, নদ শুকিয়ে যাওয়ায় তাঁরাও জল পাচ্ছেন না। পানীয় জল পেতে গ্রামের মানুষকে কয়েক কিলোমিটার পথ উজিয়ে জল আনতে হচ্ছে।

এ বার কেন এলাকায় ট্যাঙ্কে করে জল সরবরাহের ব্যবস্থা হয়নি, সে প্রশ্নে ব্লক স্তরের এক অফিসার জানান, জল সরবরাহ করতে ইচ্ছুক ঠিকাদার সংস্থাগুলির কাছ থেকে দরপত্র ডেকে গত এপ্রিলে নোটিশ ঝোলায় ব্লক প্রশাসন। কিন্তু একটিও ঠিকাদার সংস্থা দরপত্র জমা করেনি। কেন কোনও সংস্থা দরপত্র জমা দিল না? বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুধন বাউরি বলেন, “আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গত বছর যাঁরা জল সরবরাহ করেছিলেন, তাঁদের এখনও বহু টাকার বিল বাকি পড়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা জল সরবরাহে রাজি হচ্ছেন না।” তবে বুধনবাবু দাবি করেন, দু’এক দিনের মধ্যেই ওই সব নির্জলা অঞ্চলে ট্যাঙ্কে করে জল সরবরাহ করা হবে। বিল বকেয়ার কারণে যদি সত্যি ঠিকাদার সংস্থাগুলি জল সরবরাহে রাজি না হয়ে থাকে, তবে কেন ব্লক প্রশাসন আগে-ভাগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি? বারাবনির বিডিও উজ্জ্বল বিশ্বাস এ নিয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

সোমবার বারাবনির বিস্তীর্ণ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বারাবনি পঞ্চায়েতের ভানোড়া, মাজিয়ারা, মদনমোহনপুর, ভস্কাজুরি, আদিবাসি পাড়ার মানুষজন জল না মেলায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ। জামগ্রাম পঞ্চায়েতের শিরিষডাঙা, সন্যাসী, খয়েরবনি, জামজুরি, ইটাপাড়া পঞ্চায়েতের বালিয়াপুর এবং পানুরিয়া পঞ্চায়েতের দিঘলপাহাড়ি, কাশকুলি, ছোটকোড়া ও ছাতাডাঙা এলাকাতেও পানীয় জলের সঙ্কট রীতিমতো। কাশকুলি এলাকার বাসিন্দা মোহন ঘোষ জানান, প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর থেকে তাঁদের জল বয়ে আনতে হয়। তিনি বলেন, “দিনে ৩৫ লিটার জল দরকার। সেই জায়গায় এখন তিন লিটার জল জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছি।”

বারাবনির বাসিন্দা মনোজ যাদব দাবি করেন, তাঁদের এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের পাইপলাইন আছে। কিন্তু এলাকায় প্রচুর অবৈধ সংযোগ নেওয়ার জন্য সাধারণ বাসিন্দারা জলই পাচ্ছেন না। ভস্কাজুরি আদিবাসি পাড়ার প্রেমা টুডু আবার অভিযোগ করেন, প্রতি বারই তাঁদের এলাকায় প্রবল জলসঙ্কট থাকে। স্থায়ী সমাধানের কথা কেউ ভাবেন না। মাটি খুঁড়ে তাঁদের জল বের করতে হয়। প্রচণ্ড গরমের জন্য পাতালের জলও শুকিয়ে গিয়েছে।

আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, “আমি বিষয়টি জেনেছি। খুব দ্রুত ওই সব এলাকায় ট্যাঙ্কে করে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water scarcity barabani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE