নীচে পড়ে যাওয়া গাড়ি দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র।
ডিভিসি মোড় থেকে সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার মুখের রাস্তা ও সংলগ্ন কালভার্ট চওড়া করার দাবি দীর্ঘ দিনের। রবিবার সেই সরু ও ভগ্নপ্রায় কালভার্ট থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নীচের খালে পড়ে গেল একটি গাড়ি। আহত হয়েছেন তিন জন। তাঁদের সিটি সেন্টারের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর ফের সামনে এল সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার সামনের রাস্তা চওড়া করার দাবি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডটি যখন তৈরি হয়েছিল তখন দুর্গাপুর ছিল নোটিফায়েড এরিয়া। সেই সময় এই শহর ছিল মূলত সরকারি পরিবহণের উপর নির্ভরশীল। বাসের সংখ্যাও অনেক কম ছিল। সেই সময়েই ডিভিসি মোড় থেকে সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য এই রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছিল। সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড থেকে বেরিয়ে এই রাস্তাটি মিশেছে জাতীয় সড়কের ডিভিসি মোড়ে। রাস্তাটি সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার আগের বাঁকের মুখে চার্চের কাছে তুলনায় অনেকটাই সরু হয়ে গিয়েছে। সিটি সেন্টার ঢোকার আগে রয়েছে একটি কালভার্ট। সেখানে রাস্তা আবার আরও সংকীর্ণ। ফলে দ্রুতগতিতে বাসস্ট্যান্ডে ঢুকতে চাওয়া যানবাহন বাঁকের মুখে এসে গতি নিয়ন্ত্রন করতে সমস্যায় পড়ে।
দুর্গাপুর পুরসভা হওয়ার পরে দুর্গাপুর-কলকাতা বাস চালু হয়। আস্তে আস্তে সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড হয়ে ওঠে শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত এলাকা। কিন্তু রাস্তা ও কালভার্ট চওড়া হয়নি। অথচ বর্তমানে পড়াশোনা কিংবা কর্মসূত্রে অনেক বাইরের লোক এই শহরে থাকেন। দুর্গাপুর রেল স্টেশন শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে হওয়ায় তাঁদের অনেকেই সিটি সেন্টার থেকে বাসে যাতাযাত করেন। সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, এখান থেকে প্রতি আধ ঘণ্টা অন্তর কলকাতাগামী বাস ছাড়ে। শুধু কলকাতা নয়, জামশেদপুর, ভুবনেশ্বরগামী বাসও ছাড়ে এই বাসস্ট্যান্ড থেকে। কল্যাণী, হাবড়া, কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপ, বর্ধমান, বোলপুর, বহরমপুর, মালদহ, আসানসোল, দেওঘর, রাঁচি-সহ বিভিন্ন রুটের বাস এই বাসস্ট্যান্ড হয়ে যায়। এ ছাড়াও রয়েছে মিনিবাস, ছোট গাড়ি ও লরির চাপ। ফলে সরু ওই রাস্তায় প্রায়ই তৈরি হচ্ছে যানজট। অন্য গাড়িতে জায়গা দিতে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। ঠিক যেমনটি ঘটেছে রবিবার।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একই ভাবে বছর তিনেক আগে একটি লরি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে কালভার্টের রেলিংয়ে ধাক্কা মেরেছিল। এই রাস্তায় নিয়মিত যাতায়াতকারী বাসচালক রামেশ্বর সাউ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন এই রাস্তায় বাস চালাই। তাই সমস্যা হয় না। কিন্তু নতুন চালকেরা প্রথম দিকে এই রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন।” ইস্পাত নগরীর বি-জোনের বাসিন্দা শান্তপ্রসাদ রায় বলেন, “আমি গাড়ি চালিয়ে ওই রাস্তায় প্রতিদিন যাতায়াত করি। তবুও মাঝেমধ্যে সমস্যা হয়। রাস্তার ওই অংশ দ্রুত চওড়া করা দরকার।”
এডিডিএ’র এক আধিকারিক বলেন, “সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডটি জাতীয় সড়কের পাশে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তখন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির সংখ্যা এমনিতেই কমে যাবে। তবে আপাতত রাস্তার ওই অংশটি চওড়া করা যায় কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy