লোকসভা ভোটের মুখে জেলার নানা জায়গা থেকে মিলছে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা। বৃহস্পতিবার দিনভর জেলা পুলিশের তরফে একটি বিশেষ অভিযান চালানো হয়। সবমিলিয়ে ৫৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৭০টি গুলি ও ১৮১টি বোমা আটক করা হয়েছে। সঙ্গে আগে থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল এমন ৮১ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃতের সংখ্যা ৪১। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ভোটের আগে নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থেই জেলার ১৭টি জায়গায় একসঙ্গে তল্লাশি চালানো হয় এ দিন।” আটক করা ৫৪টি অস্ত্রের মধ্যে বর্ধমানে ৪, রায়নায় ৭, মেমারিতে ৩, জামালপুরে ৩, কাটোয়ায় ৫, মঙ্গলকোটে ৩, কেতুগ্রামে ৩, নাদনঘাটে ৩ ও কালনায় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এসপির দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, লোকসভা ভোটের কিছুদিন আগে থেকেই জেলা জুড়ে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র মিলছিল। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ৬০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১১২টি গুলি, ২৫৩টি বোমা ও ৪০ কিলো বোমার মশলা উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি রাখার দায়ে ৭৬ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা ছিল ৩৪। গুলি উদ্ধার হয়েছিল ৪১টি এবং ২০৭টি বোমা। গ্রেফতারের সংখ্যা ৫৭। মার্চের ১ তারিখ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৩২ রাউন্ড গুলি, ১৫৭৮টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে অস্ত্র বা বোমা রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫৯২ জনকে। উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে নাইন এমএম পিস্তল, মাস্কেট ও পাইপগান রয়েছে।
এসপি জানিয়েছেন, এই তিন মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট মামলায় মোট ১৩৮৮জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে ৫৬৬৬ জনকে। জেলায় বিভিন্ন অপরাধে মোট ১৮৫৪ জনের বিরুদ্ধে গত জানুয়ারি থেকে ৪ এপ্রিলের ভেতর আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে ১৭৫১ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করিয়েছে পুলিশ। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে এমন ২২২ জনকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। এদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৫০ জনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিজ্ঞপ্তি আদলতের নির্দেশে জারি করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল, পরে গ্রেফতার করা হয়েছে এমন লোকেদের মধ্যে রয়েছে তৃণমূলের কেতুগ্রামের নেতা সহিদ দফাদার, মঙ্গলকোটের সইফুল খান ও বর্ধমান শহরের তৃণমূল আশ্রিত তোলাবাজ দুষ্কৃতী পাপ্পু রাউত। সহিদের বিরুদ্ধে আটটি গ্রেফতারি পরওয়ানা ঝুলছিল। এসপি বলেন, “যে সমস্ত লোকেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে, তাদের ভেতর সমস্ত রাজনৈতিক দলের লোকেরাই আছেন। জেলার সমস্ত থানাকে বলা হয়েছে, ভোটের আগে ওই ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে হবে। তাই আমরা প্রায় প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছি।”
এ দিকে ভোটের মুখে সমস্ত থানায় লাইসেন্স রয়েছে এমন আগ্নেয়াস্ত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy