Advertisement
০৬ মে ২০২৪

নিজের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে জেদ নেতার

পুরভোটের ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস এবং সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না কালনার সাত কাউন্সিলর। তার মধ্যে রয়েছেন পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধানও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৭
Share: Save:

পুরভোটের ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস এবং সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না কালনার সাত কাউন্সিলর। তার মধ্যে রয়েছেন পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধানও।

কয়েকমাস আগে থেকেই জেলার কালনা, মেমারি, দাঁইহাট এবং কাটোয়া পুরসভার ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস এবং সংরক্ষণের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে প্রশাসন। শুরু থেকেই তালিকা নিয়ে জলঘোলা চলে। ২ ফেব্রুয়ারি খসড়া তালিকা বের করে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসকের দফতরের পাশাপাশি পুরসভাগুলি সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকের দফতরেও প্রকাশিত হয় তালিকা। এরপরেই ক্ষোভ দেখা যায় রাজনৈতিক মহলে। সিপিএমের কালনা শহর লোকাল কমিটির তরফে তালিকা যথাযথ নিয়ম মেনে তৈরি করার লিখিত আবেদন করা হয় জেলাশাসকের কাছে। কালনা পুরসভা এলাকাতে তৃণমূলের একাংশের মধ্যেও তালিকা নিয়ে ক্ষোভ দেখা যায়। প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররাও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চার পুর এলাকার মধ্যে সবথেকে বেশী অভিযোগ জমা পরে কালনা থেকে। তারপর অভিযোগগুলির ভিত্তিতে শুনানি চলে। শুনানির শেষ দিন সোমবারও অনেকে জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে নানা আপত্তির কথা জানান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চূড়ান্ত তালিকা বের করে জেলা প্রশাসন।

ওই তালিকা অনুযায়ী শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫, ৬, ৭, ১২ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত। তার মধ্যে ৬ ও ১৮ তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সাধারণ মহিলাদের জন্য রয়েছে ২, ৮, ১১ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড। এই সংরক্ষণের ফলে যে সাত কাউন্সিলর নিজেদের ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতে পারছেন না তার মধ্যে তৃণমূল ও সিপিএমের তিন জন করে কাউন্সিলর রয়েছেন। আর এক জন কংগ্রেসের।

১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়ে পুরপ্রধান হয়েছিলেন বিশ্বজিত্‌ কুণ্ডু। এ বার ওই ওয়ার্ড তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। বুধবার বিশ্বজিত্‌বাবু বলেন, “নিজের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারব না ঠিকই, তবে দল অন্য ওয়ার্ডে টিকিট দিলে নিশ্চয় লড়ব।” একই দশা উপ-পুরপ্রধান বিশ্বজিত্‌ সেনেরও। তাঁর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বার মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তবে প্রথমে যে খসড়া তালিকা বের হয়েছিল, সেখানে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডটি সংরক্ষণের বাইরে ছিল। উপ-পুরপ্রধানকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের দাবি ছিল সঠিক ভাবে তালিকা প্রকাশের। কোনও নির্দিষ্ট ওয়ার্ড নিয়ে নয়। প্রশাসন যে তালিকা প্রকাশ করেছে তা মেনে নিয়েছি।” তাহলে কি অন্য ওয়ার্ডই ভরসা? জবাব আসে, “অন্য ওয়ার্ডে দাঁড়ানোর ইচ্ছা নেই।” নিজের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না তৃণমূল কাউন্সিলর কল্পনা বসু ও চন্দনা বিশ্বাসও।

সিপিএম থেকে নির্বাচিত যে তিন জন এ বার নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না তারা হলেন গৌরাঙ্গ গোস্বামী, তপন ভৌমিক এবং দেবাশিস দে। এর মধ্যে প্রাক্তন চেয়ারম্যান গৌরাঙ্গবাবুর ওয়ার্ডটি এ বার তফসিলি জাতি হিসাবে সংরক্ষিত। সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটি সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রথম তালিকা প্রকাশের পর আমরা নির্দিষ্ট কিছু তথ্য জেলাশাসকের কাছে তুলে দিয়ে নতুন তালিকার আবেদন জানিয়েছিলাম। চূড়ান্ত তালিকায় বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা গিয়েছে।” তাঁর দাবি, “ছোট ছোট ত্রুটি আছে। তা মেটাতে গেলে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। তবে আমরা তা ভাবছি না।” কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ জানান, এটাই চূড়ান্ত তালিকা। নিয়ম অনুযায়ী আর এই তালিকা নিয়ে আর কোনও অভিযোগ নেওয়া যায় না। তবে কেউ পরিবর্তন চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে যেতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kalna municipal vote
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE