Advertisement
১১ মে ২০২৪

পুজো শুরুর আগেই ভিড় জমেছে মণ্ডপে

শহর সেজে উঠেছে আলোর সাজে। পাল্লা দিয়ে শীতের আমেজ গায়ে মেখে পুজোর আগের রাত থেকেই মণ্ডপে ভিড় জমিয়েছে কচিকাচা থেকে বড়রা। কাটোয়া স্টেশন থেকে বেরিয়ে সার্কাস ময়দান, কাছারি রোড, পুরসভা মোড় তো বটেই, শহর লাগোয়া পানুহাটেও ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের রেশ। রবিবার রাত থেকেই কার্তিক পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে মণ্ডপে রীতিমতো লাইন পড়ে গিয়েছে।

মণ্ডপে-মেলায় জমেছে পুজো। পানুহাটের নিউ আপনজন ও ইয়ং স্টাফের মণ্ডপের সামনে নিজস্ব চিত্র।

মণ্ডপে-মেলায় জমেছে পুজো। পানুহাটের নিউ আপনজন ও ইয়ং স্টাফের মণ্ডপের সামনে নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪১
Share: Save:

শহর সেজে উঠেছে আলোর সাজে। পাল্লা দিয়ে শীতের আমেজ গায়ে মেখে পুজোর আগের রাত থেকেই মণ্ডপে ভিড় জমিয়েছে কচিকাচা থেকে বড়রা। কাটোয়া স্টেশন থেকে বেরিয়ে সার্কাস ময়দান, কাছারি রোড, পুরসভা মোড় তো বটেই, শহর লাগোয়া পানুহাটেও ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের রেশ। রবিবার রাত থেকেই কার্তিক পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে মণ্ডপে রীতিমতো লাইন পড়ে গিয়েছে।

কয়েক বছর ধরেই থিম পুজোয় মেতে উঠেছে কাটোয়া। সেখানে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে পানুহাট। পানুহাটের নিউ আপনজন ক্লাব ও ইয়ং স্টাফের পাশাপাশি মণ্ডপ দেখতে ভিড় শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর আগের রাত থেকেই। নিউ আপনজন ক্লাবের থিম, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ। চট ও পাট দিয়ে অর্জুনের রথের আদলে মণ্ডপ গড়েছে তারা। মণ্ডপ জুড়ে থাকছে গীতার সারাংশ। ইয়ং স্টাফ ক্লাব আবার ক্রিস্টাল কাঁচ দিয়ে তাদের মণ্ডপ গড়েছে। বারুজীবী পল্লি ইয়ং বয়েজ ক্লাবের আবার থিম-- মনের মানুষ। সুপারি-হরিতকি-কাঁচাবেল-কতবেল দিয়ে তৈরি মণ্ডপে লালনের জীবনীর মধ্যে দিয়ে সৌহার্দ্যবার্তা তুলে ধরেছেন উদ্যোক্তারা। দেখানো হয়েছে, লালনের হিন্দু পরিবারে বড় হওয়া, কলেরাতে আক্রান্ত হওয়ার পরে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া, মুসলিম পরিবারে শুশ্রুষা পেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা, জঙ্গলের ভিতর বাস করা সবই। শেষ দৃশ্যে মনের মানুষের খোঁজে বেরিয়ে যাচ্ছেন লালন ফকির।

পুজোর দু’দিন শহরকে আলোকিত করতে কাছারি রোড ও সার্কাস ময়দান এলাকায় দুটি এলইডি টাওয়ার বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও আলোয় বাধা পড়েছে বিভিন্ন কার্টুন চরিত্র। শহরের বিভিন্ন এলাকার বাড়িগুলিও এলইডি আলোয় সেজে উঠছে। রবিবার থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে বাজছে স্বর্ণযুগের বাংলা গান। এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে পুজো উদ্বোধনের ধুম। উদ্বোধনের সঙ্গে শীতবস্ত্র বিতরণ, কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা, রক্তদান শিবিরও করছেন উদ্যোক্তারা। বেশিরভাগ পুজো কমিটির উদ্বোধনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “একদিকে কাটোয়ার ঐতিহ্যবাহী কার্তিক পুজোকে সবার কাছে তুলে ধরা, পাশাপাশি সমাজ সচেতনতার কাজ করছে ক্লাবগুলি।”

কাটোয়া স্টেশনের কাছে জয়শ্রী সঙ্ঘ শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ করেছে। বৌদ্ধমূর্তির মতোই সাজানো হয়েছে কার্তিককে। হাজারো করোগেট দিয়ে মেদিনীপুরের শিল্পীরা ওই গুম্ফা বানিয়েছেন। সার্কাস ময়দানের ইউনিক ক্লাব প্লাইউড দিয়ে কাল্পনিক মন্দির তৈরি করেছে। কাছারি রোডের জনকল্যাণ সঙ্ঘের মণ্ডপটি ফাইবার দিয়ে তৈরি। কেডিআইয়ের পিছনে দেশবন্ধু ক্লাব দু’হাজার ঘন্টা, এক হাজার সিংহাসন, ৬০০ কোষাকুসি দিয়ে রাজস্থানের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়েছে। ঘোষহাটের একটি ক্লাবের থিম নারী নির্যাতন। এ ছাড়াও নজর কাড়বে সার্কাস ময়দানের বিদ্যাসাগর সঙ্ঘ, হাসপাতাল পাড়ার বিগ স্টার, কাছারি রোডের রেনেসাঁস।

মণ্ডপের বৈচিত্র্যের মতোই ফুচকার স্টল থেকে নতুনগ্রামের কাঠের শিল্পের হরেকরকম দোকান নিয়ে কাটোয়াতে হাজির হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, শহরের বাসিন্দারা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী এলাকা এমনকী কলকাতা, দিল্লি থেকেও মানুষজন কার্তিক পুজোয় ভিড় জমান। তাঁদের দাবি, “বিক্রি ভাল হয় বলেই তো ফি বছর এই সময় কাটোয়ায় আসা বাঁধা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

soumen dutta kartik pujo katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE