বেআইনি অটো চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পুলিশ কমিশনারেটের কাছে সেই নির্দেশের চিঠিও এসে গিয়েছে। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা।
মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে ২১টি রুটে প্রায় সাত হাজার বেআইনি অটো চলে। এর ফলে ক্ষতি হচ্ছে মিনিবাসের। সমস্যায় পড়ছেন পরিবহণ কর্মীরা। ১৯৯১ সালে প্রথম হাইকোর্টে মামলা করেছিল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন। সে বারও হাইকোর্ট বেআইনি অটো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। শুরুতে প্রশাসন তা কার্যকর করায় বেশ কয়েক বছর অবৈধ অটো চলেনি। কিন্তু কড়াকড়ি শিথিল হওয়ায় ফের বেআইনি অটোর রমরমা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, “আমরা গত তিন বছর ধরে প্রশাসনের কাছে লাগাতার অবৈধ অটো চলাচল বন্ধের আবেদন জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের কথা কানে তোলা হচ্ছে না। অগত্যা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।” তিনি জানান, বেআইনি অটোর দৌরাত্ম্যে ২১টি রুটে এখনও পর্যন্ত ১৩৫টি মিনিবাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছেন ৪০৫ জন পরিবহণ কর্মী। এই পরিস্থিতিতে বেআইনি অটো চলাচল বন্ধ না করা হলে মিনিবাস পরিবহণ মুখ থুবড়ে পড়বে বলে দাবি বাস মালিকদের। আদালত থেকে অটো চলাচল বন্ধের নির্দেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে এডিসিপি (ট্রাফিক, সেন্ট্রাল) বিশ্বজিত্ ঘোষ বলেন, “আমরা সময় মতো এই নির্দেশ কার্যকর করব।”
তৃণমূল অনুমোদিত পরিবহণ কর্মী সংগঠন ‘মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’ অবশ্য অটো বন্ধের সিদ্ধান্তে অখুশি। সংগঠনের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া বলেন, “অটো বন্ধ হলে বেকার হয়ে যাবেন অন্তত সাত হাজার কর্মী। তাঁদের পরিবারের ভবিষ্যত্ প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকব না।” জানা গিয়েছে, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার আসানসোলে সংগঠনের পক্ষ থেকে অটোচালকদের পথ অবরোধ কর্মসূচি নেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলে পরিবহণ দফতর অনুমোদিত যাতায়াতকারী বৈধ অটোর সংখ্যা মাত্র সাড়ে তিনশো। বাকি প্রায় ছ’হাজার অটো ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে চলছে। মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায়ের দাবি, আসানসোলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ৩৭টি রুটে মিনিবাস চলে না। সেখানে পরিবহণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ওই সব এলাকায় অটো চালানো হলে সব পক্ষের সমস্যা মিটে যাবে। সুদীপবাবুর দাবি, ওই সব এলাকার তালিকা তাঁরা প্রশাসনের কাছে জমা দিয়ে আবেদন করেছেন, সেখানে অটো চালানো হোক। কিন্তু প্রশাসন উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। এডিসিপি বিশ্বজিত্বাবু জানান, আইনি সীমারেখার মধ্যে থেকে সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy