Advertisement
E-Paper

বেআইনি দোকানে ভরা বাসস্ট্যান্ড, নেই ব্যবস্থা

বাসস্ট্যান্ড উন্নয়ন তহবিলের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিল দিন কয়েক আগেই। এরই মধ্যে আবার সেই সিটি বাসস্ট্যান্ডে বেআইনি ভাবে ব্যবসার অভিযোগ উঠল আসানসোলে। অনুমতি না নিয়ে দোকানপাট ফেঁদে বসার অভিযোগের কথা স্বীকার করেছে পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৪ ০১:২৭
পুরসভা থেকে দমকল, কারও কোনও অনুমতি না নিয়ে চলা হোটেলগুলির বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

পুরসভা থেকে দমকল, কারও কোনও অনুমতি না নিয়ে চলা হোটেলগুলির বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

বাসস্ট্যান্ড উন্নয়ন তহবিলের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিল দিন কয়েক আগেই। এরই মধ্যে আবার সেই সিটি বাসস্ট্যান্ডে বেআইনি ভাবে ব্যবসার অভিযোগ উঠল আসানসোলে। অনুমতি না নিয়ে দোকানপাট ফেঁদে বসার অভিযোগের কথা স্বীকার করেছে পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

২০০৯ সালে পুরবোর্ড দখল করার পরে সিটি বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও পরিষেবার উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছিল কংগ্রেস-তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। কিন্তু বোর্ডের মেয়াদ শেষের মুখে বাসস্ট্যান্ড উন্নয়ন তহবিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। যিনি তহবিলের টাকা আদায় করতেন তাঁকে প্রথমে নোটিস পাঠিয়ে জমা না পড়া ১৮ লক্ষ টাকার বিশদ হিসেব চান সদ্য প্রাক্তন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তা না পেয়ে এক মাস পরে পুলিশে অভিযোগ করেন তাপসবাবু। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে আবার বাসস্ট্যান্ড চত্বরে অবৈধ ভাবে দোকানপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি ভাবে চলা দোকানগুলির বেশির ভাগই খাবারের। ভিড় বাসস্ট্যান্ডে বড় বড় কয়লার চুল্লি জ্বালিয়ে রান্না হচ্ছে। অথচ, দোকানগুলিতে তো দূর, গোটা বাসস্ট্যান্ডেই কোনও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। আগুন লাগলে যে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে, মেনে নিচ্ছেন নিত্যযাত্রী থেকে বাসস্ট্যান্ডের অন্য ব্যবসায়ীরা। আসানসোলের দমকলের ওসি সেলিম জাভেদ জানান, এই ধরনের ব্যবসা করার আগে দমকলের ‘নো-অবজেকশন’ শংসাপত্র নিতে হয়। তাঁর কথায়, “আসানসোল বাসস্ট্যান্ডের ওই হোটেলগুলির জন্য আমাদের কাছ থেকে কোনও শংসাপত্র নেওয়া হয়নি।”

তাহলে দিনের পর দিন এই দোকানগুলি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কী ভাবে? সদ্য মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরবোর্ডের তরফে এই বাসস্ট্যান্ড দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন মেয়র পারিষদ অনিমেষ দাস। তিনি বলেন, “আমরাও এই অভিযোগ পেয়েছিলাম। কিছু দিন আগে উন্নয়ন কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পুলিশের সাহায্য নিয়ে এই সব বেআইনি ভাবে চলা দোকানপাটের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।” কিন্তু ১৬ জুলাই পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়েছে। তার পরে পুরসভায় প্রশাসকের পদে এসেছেন আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক অমিত দত্ত বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে আছে। সরেজমিনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। দিন কয়েক অপেক্ষা করে দেখতে চাই। তার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

বাসস্ট্যান্ডের সমস্যা অবশ্য এখানেই শেষ নয়। প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন এখান দিয়ে। নানা জেলা তো বটেই, ঝাড়খণ্ড, বিহারের মতো আশপাশের রাজ্য থেকেও মোট শ’তিনেক বড় বাস ও সাড়ে চারশো মিনিবাস চলে। কিন্তু ন্যূনতম পরিষেবাও মেলে না বাসস্ট্যান্ডে। নেই কোনও যাত্রী-ছাউনি। চড়া রোদ বা বৃষ্টির জল মাথায় নিয়েই যাত্রীরা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে বাধ্য হন। পানীয় জলেরও ভাল বন্দোবস্ত নেই। নিয়মিত আবর্জনা সাফাই হয় না। উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় নর্দমার জল উপচে পড়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। বর্ষায় হাঁটুজল ভেঙে মানুষজনকে যাতায়াত করতে হয়। রাতে বাসস্ট্যান্ডে যথেষ্ট আলো থাকে না।

সিটি বাসস্ট্যান্ডের এই সব সমস্যাও পুরসভার অজানা নয়। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, বৈঠক করে এই সব সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।

sushanta banik asansol illegal shop bus stand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy