কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন কিছু শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে ওই শিক্ষকদের মধ্যে ২২ জনকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বরখাস্ত করলেন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদে বুধবার ফের বিক্ষোভ দেখান শিক্ষকদের একাংশ।
ঘটনাটি ৩১ জুলাইয়ে। বিধাননগরের কলেজের জন্য তাঁদের দিয়ে ছাত্র ধরে আনার কাজ করানো হচ্ছে, এই অভিযোগে ২২ জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেন সে দিন। ২ অগস্ট শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিষয়টি মিটিয়ে নেন। তখনকার মতো সমস্যা মিটলেও মঙ্গলবার বিকেলে ফের বেশ কয়েক জন শিক্ষক বিক্ষোভ দেখান কলেজ গেটে।
ওই শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে যখন-তখন দুর্ব্যবহার করছেন, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ছুটির দিনেও ক্লাস নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, আগাম নোটিস ছাড়া শিক্ষকদের চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে এবং মাসের নির্দিষ্ট সময়ে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অনির্দিষ্ট কাল আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ওই শিক্ষকেরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ আন্দোলন তোলার আর্জি জানালেও শিক্ষকেরা অনড় থাকেন। এর পরেই রাতে ২২ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, মঙ্গলবার প্রথমার্ধে ওই শিক্ষকেরা ক্লাস নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ দ্বিতীয়ার্ধে তাঁরা জানান, অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কলেজের ম্যানেজার (প্রশাসন) বিপ্লব বসুঠাকুরের বক্তব্য, “এমনটা করা যায় না। ওই শিক্ষকদের ক্লাস নিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা অনড় থাকেন।”
বুধবার সকালে কলেজ গেটে ফের জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান বেশ কিছু শিক্ষক। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন কিছু পড়ুয়াও। তাঁদেরও অভিযোগ, কলেজের পরিকাঠামো যথাযথ নয়। ঠিক মতো চাকরির বন্দোবস্ত করা হয় না। ছাত্রাবাসের খাবারও ভাল নয়। বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক সুদীপ মজুমদার, অভিজ্ঞান রক্ষিতদের ক্ষোভ, “যে সুবিধা দেওয়ার কথা, তা এখানে দেওয়া হয় না। প্রতিবাদ করে বরখাস্ত হতে হল। এ সবের ফলে আখেরে পড়ুয়াদেরই ক্ষতি হবে। কর্তৃপক্ষ যদি ন্যূনতম নমনীয়তা দেখান, এখন পড়াশোনায় যে বিঘ্ন হচ্ছে, পরে আমরা বাড়তি ক্লাস নিয়ে তা পুষিয়ে দিতে রাজি আছি।”
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, কলেজে পঠন-পাঠনে অসুবিধা হচ্ছে না। বিপ্লববাবু বলেন, “কলেজের ২৬০ জন শিক্ষকের মধ্যে ১০৫ জন আন্দোলন করছেন। বাকিরা ক্লাস নিচ্ছেন। সব দাবি-দাওয়া বিবেচনার জন্য কমিটি গড়া হয়েছে। তার পরেও যে ভাবে অসহযোগিতা করা হচ্ছে, তা কাম্য নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy