Advertisement
E-Paper

বাবুল আঙ্কলের খোঁজে ডায়েরি খুদেদের

অস্ত্র আইনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ যে ধোপে টিকছে না তা বুঝতে পেরে মামলা ‘ক্লোজ’ করার কথা ভাবছিল পুলিশ। সে মামলায় যবনিকা পতনের আগেই, সাদা কাগজে ঝকঝকে টাইপে বুধবার আসানসোলের কাছে নিমচা ফাঁড়িতে এল এক অভিনব আবেদন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় নিখোঁজ!

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৪ ০২:০২

অস্ত্র আইনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ যে ধোপে টিকছে না তা বুঝতে পেরে মামলা ‘ক্লোজ’ করার কথা ভাবছিল পুলিশ। সে মামলায় যবনিকা পতনের আগেই, সাদা কাগজে ঝকঝকে টাইপে বুধবার আসানসোলের কাছে নিমচা ফাঁড়িতে এল এক অভিনব আবেদন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় নিখোঁজ!

চার লাইনের সেই আবেদনের নির্যাস: ‘আওয়ার এমপি বাবুল আঙ্কল ইজ মিসিং। প্লিজ ডু সামথিং টু ব্রিং হিম ব্যাক টু আসানসোল।’ নীচে ত্যাড়াবাঁকা হস্তাক্ষরে হিন্দি ও ইংরেজিতে ১১ খুদে পড়ুয়ার স্বাক্ষর। আবেদনে শুদ্ধ ইংরেজিতে উল্লেখ, ভোটের সময়ে ‘বাবুল কাকা’ কথা দেন, থাকবেন আসানসোলেই। বাবুল তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গাইতে বলেছিলেন, ‘কহো না প্যার হ্যায়’। ‘আঙ্কল’কে খুঁজে না পেয়ে তারা জানতে চায়, ‘কেয়া হুয়া তেরা ওয়াদা’।

আপাত ভাবে নিছকই মজার অভিযোগ। আসানসোলের জে কে নগরের ওই স্কুল পড়ুয়াদের এই ঘোর ‘শ্লেষের’ পিছনে যে পাকা মাথা আছে, তা স্পষ্ট। আর এ কাজ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বলেই মনে করছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে নিচ্ছেন না বাবুলও। তিনি বলছেন, “আমি যে হারিয়ে যাইনি, আসানসোল-রানিগঞ্জের বণিকসভার সঙ্গে কথা বললেই তা বুঝতে পারবেন। তাঁরা জানেন, দিল্লিতে কোন মন্ত্রীর কাছে আসানসোলের উন্নয়নের স্বার্থে কী ব্যাপারে দরবার করেছি।” কাজের ফিরিস্তি না দিলেও বাবুল বলছেন, “ওঁরা (তৃণমূল) ভাবছেন খুব বুদ্ধিমানের কাজ হল, আসলে এটা যে ঘোর মূর্খামি তা মানুষ বুঝেছেন।”

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলা বিজেপি নেতৃত্বও। দলের বর্ধমান জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারের কথায়, “তৃণমূলের এই নিম্নমানের রসিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল বের করব ভেবেছিলাম। বাবুলের কথায় আপাতত তা করছি না। তবে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এ ব্যাপারে কারা জড়িত তা যদি পুলিশ না জানাতে পারে তবে বড় আন্দোলনে নামব।”

এ কাজ কার মস্তিষ্কপ্রসূত?

তৃণমূলের একটি সূত্রে বলছে, আসানসোল পুরসভার এক তাবড় নেতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক নেতা ওই কাজ করিয়েছেন। ওই নেতার বুদ্ধিতেই বাবুলের বিরুদ্ধে মদ্যপানের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল বলেও তাঁর দাবি। তবে দলের এক নেতার কথায়, “এর ফলে যে বিজেপি-র সুবিধা হচ্ছে দলীয় নেতাদের একাংশ তা বুঝছেন না।” স্থানীয় বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মলয় ঘটক অবশ্য বলেন, “আগে পুলিশের কাছে বিষয়টা ভাল করে জানি, তার পরে এ নিয়ে মন্তব্য করব।”

কিন্তু এক জন সাংসদকে নিয়ে এ ধরনের মস্করা করা যায়? পুলিশই বা এই ধরনের অভিযোগ নিল কী করে?

আসানসোল কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডিসিপি বিশ্বজিৎ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, “অভিযোগ এলে নিতে আমরা বাধ্য। এরপর মামলা হবে কি না সেটা ঠিক করা হবে পরে।”

নির্বাচনের মুখে কখনও তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন কখনও বা মদ্যপান করে ধর্মস্থানে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। নির্বাচনের দিন সকালে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগও তুলেছিলেন শাসকদলের কর্মীরা। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন এ দিনের ‘মিসিং ডায়েরি।’

babul supriyo missing diary asansol
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy