Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ব্যাঙ্কই নেই, কাঁকসার গ্রামে সঙ্কটে জনধন

প্রতিটি ভারতবাসীর নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই ‘জন ধন যোজনা’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি কোনও ব্যাঙ্ক না থাকায় এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কাঁকসা ও গলসি ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশের কয়েক হাজার বাসিন্দা। ওই এলাকায় ব্যাঙ্ক তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের কাছে দরবার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২৯
Share: Save:

প্রতিটি ভারতবাসীর নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই ‘জন ধন যোজনা’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি কোনও ব্যাঙ্ক না থাকায় এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কাঁকসা ও গলসি ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশের কয়েক হাজার বাসিন্দা। ওই এলাকায় ব্যাঙ্ক তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের কাছে দরবার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডুর আশ্বাস, “ওই এলাকায় ব্যাঙ্ক তৈরির জন্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

কাঁকসা ব্লকের আমলাজোড়া পঞ্চায়েত, গলসি ২ ব্লকের বুদবুদ থানার ভরতপুর-সহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় রয়েছে মোট ৩টি হাইস্কুল ও ১০টি প্রাথমিক স্কুল। বসবাস করেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। যাঁদের অনেকেরই নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। এলাকায় ব্যাঙ্ক না থাকায় পানাগড় এলাকার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে স্কুলের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের বেতন, স্থানীয় পঞ্চায়েতের যাবতীয় আর্থিক লেনদেন হয়। ব্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক কিমি উজিয়ে যেতে হয় পানাগড় কিংবা রাজবাঁধ। স্কুল পড়ুয়া থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সমস্যায় পড়েন সবাই। একই সঙ্গে ব্যাঙ্ক না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্পের সুযোগও পাচ্ছেন না তাঁরা।

আমলাজোড়া এলাকার পাশেই রয়েছে জাতীয় সড়ক। রয়েছে রেললাইন। ব্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য সদাব্যস্ত জাতীয় সড়রক ও রেললাইন পেরিয়ে যেতে হয়। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। ওই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী স্নেহময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বুড়ো বয়সে প্রতি মাসে পেনশন তুলতে পানাগড় যেতে হয়। এলাকায় একটি ব্যাঙ্ক চালু হলে এই ধকল কমে।’’ সিলামপুর হাইস্কুলের শিক্ষক প্রসেনজিৎ সাহার ক্ষোভ, “স্কুলের কাজ সামলে পানাগড়ে ব্যাঙ্কে যাওয়া অনেক সময়েই সম্ভব হয় না। এলাকায় ব্যাঙ্ক থাকলে এই সমস্যা মিটবে। এলাকায় যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই তাঁরাও সহজেই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।”

সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল জানান, এলাকায় ব্যাঙ্ক না থাকায় অনেকেই স্থানীয় সিলামপুরে ডাকঘরে অর্থ লেনদেন করেন। ফলে ডাকঘরের স্বাভাবিক কাজে দেরি হয়। সুকুমারবাবুর দাবি, “বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের কাছে এলাকায় ব্যাঙ্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, সিলামপুর স্কুল ও আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা মার্কেট কমপ্লেক্সে জায়গা রয়েছে। কোনও ব্যাঙ্ক সিলামপুরে শাখা খুলতে চাইলে সেখানে জায়গার ব্যবস্থা করা সম্ভব।

বর্ধমানের কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের এক কর্তা জানান, কাঁকসা ব্লকের মধ্যে পানাগড়ে তাদের শাখা রয়েছে। নতুন শাখা খুলতে গেলে অতিরিক্ত কর্মী ও আধিকারিক প্রয়োজন। তবে তাঁর আশ্বাস, “সিলামপুরে শাখা খোলার প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হবে।” সমস্যার কথা স্বীকার করে স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য বৈশাখী মুখোপাধ্যায় জানান, কাঁকসা ব্লকের ওই এলাকায় একটি ব্যাঙ্কের খুবই প্রয়োজন। তিনি বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দারা আমায় সমস্যর কথা জানিয়েছেন। আমি জেলা পরিষদের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arpita majumder kanksa jan dhan yojna no bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE