পরিষ্কার হয় না নর্দমা।—নিজস্ব চিত্র।
নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ করছেন কালনা শহরের বাসিন্দাদের একাংশ। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, নিয়মিত সাফাই কর্মীদেরও দেখা মেলে না এলাকায়।
বর্তমানে শহরের ১৮টি ওয়ার্ড জুড়েই রাস্তা ঘাটে আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গেল। তেঁতুলতলা ও কলেজমুখী রাস্তাগুলির হাল খুবই খারাপ। শহরের বিভিন্ন বড় ভ্যাটগুলির মুখ খোলা থাকায় উপচে পড়ছে আবর্জনা। চকবাজার এলাকায় ঢোকার মুখে থাকা একটি ভ্যাট নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পুরসভাকে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নিতেও আর্জি জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি নালা গুলিতে প্রচুর পলিথিন জমা থাকায় বৃষ্টি হলেই নোংরা জল রাস্তায় চলে আসে। মাঝেমধ্যে নালাগুলি পরিস্কার করা হলেও সাফাই কর্মীরা রাস্তার উপরেই দীর্ঘক্ষণ আবর্জনা ফেলে রাখায় পথ চলতি মানুষকে অসুবিধায় পড়তে হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেল। এর জেরে শহরের পর্যটনও মার খাচ্ছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা রঘুনাথ পণ্ডিত বলেন, “কালনার পুরাকীর্তিগুলি দেখতে সারা বছর ধরেই বহু পর্যটক আসেন। কিন্তু সাফাইয়ের হাল অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় পর্যটন ব্যবসাতেও টান পড়ছে।”
পুরবাসীদের অভিযোগ, প্রতিদিন নিয়ম মতো সবকটি ওয়ার্ডে সাফাই কর্মী আসে না। পুরসভার সূত্রে জানা গেল শহরে মোট ৭০ থেকে ৭৫ জন স্থায়ী সাফাই কর্মীর প্রয়োজন থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন মাত্র ২০ জন। অনেকে অবসর নিলেও নতুন নিয়োগ না হওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে। শহরে প্রতিদিন ২০ ট্রাক্টরেরও বেশি আবর্জনা জমা হয়। পুরসভা দৈনিক চুক্তির ভিত্তিতে ৪০ জন করে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে সপ্তাহে বার তিনেক ৯টি করে ওয়ার্ডে সাফাই কর্মী পাঠানো হয়। তবুও ওয়ার্ডগুলি এক দিনে পুরো পরিস্কার করা সম্ভব হয় না।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা পলিথিন নিয়ন্ত্রণেও উদাসীন। পুরপ্রধান বিশ্বজিত্ কুণ্ডু অবশ্য বলেন, “পলিথিন বন্ধের জন্য প্রচার চালিয়েও তেমন লাভ হয় নি। তবে আবারও জোরদার প্রচার চালানো হবে।” দুর্গাপুজোর সময় শহরের একটি বারোয়ারি পুজোর ‘নাগরিক পরিষেবা’ বিষয়ে আলোচনায় যোগ দিতে এসে বিশ্বজিত্বাবু জানান, সরকারি ভাবে ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে কালনা পুরসভা। তার মধ্যেই আমরা চেষ্টা করছি ভাল পুর-পরিষেবা দিতে। তাঁর দাবি, ২০০৯ সালের পর থেকে পুর আয় বাড়ে নি তেমন। জল কর উঠিয়ে দেওয়াই আয় আরও কমেছে। পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার জঞ্জাল সাফাই কমিটির প্রেসিডেন্ট গকুল বাইনের যদিও অভিযোগ, “অনেক সময় দেখা গিয়েছে বাড়ি বাড়ি সাফাই কর্মী গেলেও তাদের জঞ্জাল না দিয়ে তা যেখানে সেখানে পলিথিন ফেলে দিচ্ছেন নাগরিকেরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy