Advertisement
১১ মে ২০২৪

বন্ধ তেলের গুদাম খুলল কী ভাবে, প্রশ্ন গলসিতে

তেলের গুদামের আগুন দেখে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল আশপাশের বাসিন্দাদের। আগুনের গ্রাস থেকে কীভাবে ঘর বাঁচাবেন সেই চিন্তাতেই বুধবার সকাল থেকে ছুটোছুটি শুরু করে দিয়েছিলেন গলিগ্রামের অমর পালেরা। বৃহস্পতিবার, ঘটনার একদিন পরেও তাঁদের চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট।

বন্ধ পুড়ে যাওয়া তেলের গুদাম। —নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ পুড়ে যাওয়া তেলের গুদাম। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:২৭
Share: Save:

তেলের গুদামের আগুন দেখে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল আশপাশের বাসিন্দাদের। আগুনের গ্রাস থেকে কীভাবে ঘর বাঁচাবেন সেই চিন্তাতেই বুধবার সকাল থেকে ছুটোছুটি শুরু করে দিয়েছিলেন গলিগ্রামের অমর পালেরা। বৃহস্পতিবার, ঘটনার একদিন পরেও তাঁদের চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। বারবার ওই গুদামে বেআইনি তেল মজুত করা হত, কারও নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা। আবার পরক্ষণেই বলছেন, আগুন আরও ছড়িয়ে গেলে কী হতো।

গলসির ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, উঁচু পাঁচিলে ঘেরা ওই গুদামে অবৈধ উপায়ে তেল মজুত করা হতো। এমনকী ওই গুদামের মালিক রেজাউল চৌধুরী ট্যাঙ্কার থেকে ডিজেল বের করে তাতে কেরোসিন মিশিয়ে ভেজাল তেল বাজারে বিক্রি করতেন বলেও তাঁদের দাবি। বেশ কিছু ট্যাঙ্কার চালক এতে জড়িত রয়েছেন বলেও গ্রামবাসীদের দাবি। স্থানীয় বাসিন্দা কর্তিক চৌধুরী বলেন, “২০০১ সালে একবার ওই অবৈধ তেলের ডিপোতে আগুন লেগেছিল। সে বার আগুনে পুড়ে তিনজন ডিপোর ভেতরে মারাও গিয়েছিলেন। তারপরে ওই ডিপো মালিকের তিন মাসের জেলও হয়। ডিপোটিও বন্ধ করে দেয় পুলিশ।” কিন্তু তারপরেও ফের ডিপো খুলে ব্যবসা শুরু হল কীভাবে সে প্রশ্নও উঠছে।

গলসি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতেই গলিগ্রাম থেকেই রেজাউল চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে রেজাউলের দুই আইনজীবি বিশ্বজিৎ দাস ও কমল দত্তের দাবি, “পুলিশ ওই ডিপো সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে রেজাউল চৌধুরীকে পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল। কিন্তু সিজেএম আদালতের বিচারক মনে করেছেন, নিজেদের হেফাজতে চাইবার মতো যথেষ্ট তথ্য পুলিশের আবেদনে নেই। তাই ওই ব্যক্তিকে জেল হেফাজতে পাঠিয়ে শনিবার মামলার সিডি চেয়েছেন সিজেএম।”

পুলিশ জনিয়েছে, রেজাউলের কাছে একটি ফায়ার লাইসেন্স, টেড লাইসেন্স ও ক্রুড অয়েল বিক্রি করার লাইসেন্স ছিল। তবে পঞ্চায়েত থেকে যে ট্রেড লাইসেন্স রেজাউল পেয়েছিল তাতে তেল মজুত করার কথা ছিল না বলেও পুলিশের দাবি।

গলিগ্রামের বাসিন্দা অমর পাল ও আরও অন্যদের সন্দেহ, জ্বলন্ত স্টোভ থেকেই ওই আগুন ধরেছে। তাঁদের দাবি, প্রতিদিন যে সমস্ত ট্যাঙ্কার ওই অবৈধ তেলের ডিপোতে ডিজেল নিয়ে ঢুকতো তার চালক ও খালাসিরা স্টোভে চা তৈরি করত। সেই জলন্ত স্টোভ থেকেই কোনও ভাবে আগুন লেগেছে বলে তাঁদের দাবি।

তবে ওই গুদামে যে দুটি ট্যাঙ্কার দাঁড়িয়েছিল সেই দশ ও ছ’চাকার যানদুটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এমনকী ওই যানগুলির নম্বর পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। ফলে ট্যাঙ্কারগুলি কোথা থেকে এসেছিল তা জানতে পারেনি পুলিশ। খোঁজ মেলেনি চালক ও খালাসিদেরও। তবে পুলিশের দাবি, ওই ট্যাঙ্কারগুলির নম্বর পাওয়া গেলেই তদন্তের অনেকটাই সুবিধা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

godown oil galsi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE