Advertisement
E-Paper

ভোট আসে ভোট যায়, পাথুড়িয়ায় আলো জ্বলে না

একটি গ্রামে বিদ্যুত্‌ রয়েছে। অথচ তার পাশের গ্রামই বিদ্যুতের অভাবে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এই আলো আধাঁরি পরিবেশেই দিনযাপন করছেন দেবশালা পঞ্চায়েতের কয়েকটি আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দারা। মাস কয়েক আগে বিদ্যুত্‌ দফতরের কিছু কর্মী বিদ্যুত্‌হীন গ্রামগুলিতে ঘুরে গেলেও এখনও জ্বলেনি আলো। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রতি বার নির্বাচনের সময়েই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁদের কাছে এসে গ্রামে বিদ্যুত্‌ সংযোগের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কাজ হয় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০০:২০
গরমে নাজেহাল।—ফাইল চিত্র।

গরমে নাজেহাল।—ফাইল চিত্র।

একটি গ্রামে বিদ্যুত্‌ রয়েছে। অথচ তার পাশের গ্রামই বিদ্যুতের অভাবে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এই আলো আধাঁরি পরিবেশেই দিনযাপন করছেন দেবশালা পঞ্চায়েতের কয়েকটি আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দারা। মাস কয়েক আগে বিদ্যুত্‌ দফতরের কিছু কর্মী বিদ্যুত্‌হীন গ্রামগুলিতে ঘুরে গেলেও এখনও জ্বলেনি আলো। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রতি বার নির্বাচনের সময়েই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁদের কাছে এসে গ্রামে বিদ্যুত্‌ সংযোগের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কাজ হয় না।

জঙ্গল ঘেরা এই পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে অনেক বছর ধরেই আদিবাসী মানুষদের বাস। গ্রামগুলিতে রাস্তা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও প্রাথমিক স্কুল থাকলেও এখনও আসেনি বিদ্যুত্‌। একুশ শতকেও দেবশালা পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের ভরসা হল হ্যারিকেন, লন্ঠন ও মোমবাতির আলো। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবশালা পঞ্চায়েতের পাথুড়িয়া, নেদাতলা, বাবলাবুনির মতো বেশ কয়েকটি গ্রামে এখনও পৌঁছায়নি আলো। পাথুড়িয়া গ্রামে বসবাস করেন মোট ২০ ঘর আদিবাসী পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দা পারু হেমব্রম, সোম মাড্ডি, লখু হেমব্রমদের অভিযোগ, “আশপাশের কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুত্‌ থাকলেও আমাদের গ্রামে এখনও বিদ্যুত্‌ আসেনি। ফলে অন্ধকার নামার পরে আমরা সেরকম কোনও কাজই করতে পারি না। গরমে কষ্ট হলেও কিছু করার নেই। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করতেও সমস্যা হয়।” গ্রামবাসীরা জানান, জঙ্গল এলাকায় সাপের উপদ্রব থাকায় রাতের অন্ধকারে বাড়ির বাইরেই বেরোতে পারেন না তাঁরা। অথচ পাশের হাড়িফেলা গ্রামেই দিব্যি রয়েছে বিদ্যুত্‌। পাথুড়িয়ার পাশের গ্রাম নেদাতলাতে ২০-২৫ ঘর আদিবাসী পরিবার বসবাস করেন। কিন্তু এই গ্রামেও বিদ্যুত্‌ নেই। পাশেই কুনুর নদীর পাড়ে অবস্থিত বাবলাবুনি গ্রামেও নেই বিদ্যুত্‌। আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত প্রায় দশটি পরিবারের বাস এই গ্রামে।

কেন বিদ্যুত্‌ আসেনি গ্রামে? পাণাগড় বিদ্যুত্‌ দফতরের এক কর্তা বলেন, “অনেক সময় পঞ্চায়েত স্তর থেকে সঠিক নথি না পাঠানোর কারণে গ্রামে বিদ্যুত্‌ সংযোগ দেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে সেরকম কোনও সমস্যা হয়েছে কি না খতিয়ে দেখব।” দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সীর দাবি, “আমরা নতুন ক্ষমতায় এসেছি। ইতিমধ্যেই কয়েকটি গ্রামে নতুন বিদ্যুত্‌ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া গেলে ওই গ্রামগুলিতেও বিদ্যুত্‌ সংযোগের ব্যবস্থা করা হবে।”

বিদ্যুত্‌হীন গ্রামগুলিতে আলো জ্বালাবার জন্য কেরোসিন তেলের উপরেই ভরসা করতে হয়। কিন্তু রেশনে সব সময় কেরোসিন তেল পাওয়া যায় না। তখন বেশি দাম দিয়ে তেল কিনতে হয় খোলাবাজার থেকে। এই গ্রামগুলির বেশির ভাগ বাসিন্দাই দিন মজুরের কাজ করেন। ফলে দিন আনি দিন খাই পরিবারে কেরোসিন তেল কিনতেই খরচ হয়ে যায় অনেকগুলি টাকা। পাথুড়িয়া গ্রামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী লক্ষ্মী মুর্মুর আক্ষেপ, “সন্ধ্যায় পড়তে বসলে অনেক সময় কেরোসিন তেলের অভাবে পড়তে পারি না।”

অনেকগুলি ভোট পেরিয়ে গিয়েছে। বিদ্যুত্‌ আসেনি গ্রামে। এখন গ্রামবাসীরা বলছেন, “প্রতিশ্রুতি অনেক হল। এ বার কাজ চাই।”

pathuria village electricity
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy