দুর্গাপুরের মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজে চলছে ভোটদানের প্রশিক্ষণ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
পছন্দ নয় কোনও প্রার্থীই। তবে সে জন্য কারও ভোট দিতে যাওয়ায় বাধা নেই। এ বার লোকসভা ভোটে সেই বন্দোবস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএমে ‘নোটা’ (নান অব দ্য অ্যাবাভ) বোতাম টিপে জানিয়ে দেওয়া যাবে অপছন্দের কথা। আর এই ‘নোটা’ নিয়েই নতুন ভোটারদের মধ্যে রীতিমতো আগ্রহ দেখা গেল দুর্গাপুরের তিন কলেজে।
নতুন ভোটারদের উৎসাহ দিতে শনিবার দুর্গাপুরের তিনটি কলেজে ইভিএম নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে যান মহকুমা প্রশাসনের কর্মীরা। তাঁরা জানান, পড়ুয়ারা সব থেকে বেশি কৌতুহল দেখান ‘নোটা’ নিয়ে। বিষয়টি কী, ইভিএমে না-ভোটের উপায় কী ভাবে বেছে নেওয়া যাবে, ‘নোটা’ বোতাম টিপলে পরে তা কোনও প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল জানতে পারবে কি নাএমন নানা প্রশ্ন করেন তাঁরা। প্রশাসনের কর্তাদের অবশ্য মত, বিষয়টি নতুন বলে হয়তো বেশি আগ্রহ চোখে পড়েছে। তবে সামগ্রিক ভাবে ভাল সাড়া ছিল শিবিরগুলিতে।
ভোটদানে আগ্রহ বাড়াতে ‘সিস্টেমেটিক ভোটার্স এডুকেশন অ্যান্ড ইলেকটোরাল পার্টিসিপেশন’ (এসভিইইপি) প্রকল্পে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটার কার্ড বা আঙুলে ভোটের কালি দেখিয়ে শপিংমল, হোটেল, নানা দোকানে জিনিসপত্রে ছাড় পাওয়া, বাউল গান, পথনাটিকার মাধ্যমে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। এই প্রকল্পেই শিবির করার সিদ্ধান্ত হয়েছে নানা কলেজে।
শনিবার দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজ, মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজ এবং একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজে এমন শিবির হয়। সেখানে ভোটদানের প্রক্রিয়া হাতে-কলমে শেখানো হয়। শিবিরের কর্মীরা জানান, পড়ুয়ারা বারবার জানতে চান ‘নোটা’র বিষয়টি নিয়ে। মাইকেল মধুসূদন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র তন্ময় দাস বলেন, “নোটার কথা জানার পরে ঠিক করেছি, প্রার্থীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ভোট দিতে যাব। কাউকে যদি পছন্দ না হয়, হাতে একটি উপায় তো রইলই।” ওই কলেজের ছাত্রী শ্রাবণী লাহার কথায়, “প্রথম বার ভোট দেব। তাই কলেজে এমন শিবির হওয়ায় সুবিধা হল। কোনও প্রার্থী পছন্দ না হলে ‘নোটা’ রয়েছে, এটা দেখে বেশ ভাল লাগল।” দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সুমন বল বলেন, “ভোট দিতে যাওয়া নিয়ে দোটানায় ছিলাম। কিন্তু এখন ঠিক করেছি, বুথে যাব। কারণ, শেষ পর্যন্ত ‘নোটা’র সুযোগ তো রয়েছে।”
কলেজের শিবিরে থাকা সরকারি কর্মী বিভাস মুহুরির মতে, “এ বারই প্রথম, তাই বোধহয় ‘নোটা’ নিয়ে আগ্রহ বেশি।” দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “শুধু ‘নোটা’ নয়, শিবিরে কলেজ পড়ুয়াদের ভোট নিয়ে যা উৎসাহ ছিল, তা দেখে আমরা খুশি।” আর এক অফিসারের বক্তব্য, “কেউ ‘নোটা’ নিয়ে জানতে চাইছেন মানেই তাতে ভোট দেবেন, তা নয়। ভোটের হার বাড়লেই আমাদের চেষ্টা সফল।” মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্তও বলেন, “একশো শতাংশ ভোটদান নিশ্চিত করাই এ বার লক্ষ্য। তারই অঙ্গ হিসেবে ইভিএম নিয়ে কলেজগুলিতে যাওয়া হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy