নেত্রী ও প্রার্থী। ছবি: উদিত সিংহ।
নিজের নাম নিয়ে যথেষ্ট সচেতন তিনি। দেওয়াল লিখনে ভুল নাম শুধরে দেন, ভোটার কার্ডে বানান ভুল শোধরাতেও এগিয়ে যান। কিন্তু দলের নেত্রীই যদি ভুল বলে ফেলেন তাহলে?
বুধবার সাতগেছিয়া বাজার মাধ্যমিক স্কুলের মাঠে সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতাজ সংঘমিতা নন, বরং সঙ্ঘমিত্রা বলেই প্রার্থীর পরিচয় দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “উনি আমাদের বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী। নাম মমতাজ সঙ্ঘমিত্রা। তিনি চিকিত্সক। বাম নেতা মনসুর হবিবুল্লাহের মেয়ে। তবু আমাদের প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর মতো এমন ডাক্তার, ডক্টরেটদেরই লোকসভা আসনে প্রার্থী করেছি আমরা।”
অথচ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরে বর্ধমানে পা রেখেই ওই প্রার্থী অনুরোধ করেছিলেন তাঁর নাম যেন মমতাজ সংঘমিতা লেখা হয়। তাঁর স্বামী মন্ত্রী নূরে আলম চৌধুরী বলেছিলেন, “সংঘমিতা সম্রাট অশোকের মেয়ের নাম। আমার শ্বশুর সৈয়দ মনসুর হবিবুল্লাহ ইতিহাস আগ্রহী মানুষ। তিনি নিজেই মেয়ের নাম রাখেন সংঘমিতা।” তারপরেও দেওয়াল লিখনে, ফ্লেক্সে প্রার্থীর নাম কোথাও মমতাজ সঙ্ঘমিত্রা, কোথাও সংঘমিতা আবার কোথাও স্বামীর পদবী জুড়ে মমতাজ সংঘমিতা চৌধুরী লেখা হয়েছে। পরে ঠিকও করা হয়। এ দিন মমতাজ বলেন, “আমার সমস্ত কাগজপত্রে মমতাজ সংঘমিতা লেখা রয়েছে। প্যান কার্ডেও তাই আছে। মমতাজ সংঘমিতা নামে মনোনয়নও জমা দিয়েছি।”
কিন্তু দিদি যে আপনার নাম ভুল বললেন? মুখ্যমন্ত্রী সভা ছেড়ে যাওয়ার পরে এই প্রশ্নের সামনে পড়ে মমতাজকে বেশ অসহায় দেখাল। বললেন, “কী করবো, দিদি ভুল করলে, আর কী বলতে পারি?” কিন্তু আমার নাম মমতাজ সংঘমিতা। সেই যে সম্রাট অশোক! তাঁর মেয়ের নামেই তো আমার নাম। এই নামই তো সমস্ত নথিপত্রে রয়েছে। এখন সঙ্ঘমিত্রা বলে পরিচিত হলে গোলমাল হয়ে যাবে।” কিন্তু আপনার ভোটার পরিচয়পত্রে যে সংঘমিত্রা লেখা হয়েছে? পাশ থেকে প্রার্থীর মেয়ে, শাবানা রোজ চৌধুরী বলেন, “ভোটার কার্ডের নামও সংঘমিত্রা বদলে সংঘমিতা করা হয়েছে। তাই উনি সংঘমিতাই। মমতাজ সংঘমিতা।”
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীর বাবার কথা বললেও তাঁর স্বামীর পরিচয় না দেওয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে সিপিএমের অন্দরে। নেতাদের একাংশের দাবি, ভোটের বৈতরণী পার করতে সুকৌশলে সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন স্পিকার প্রয়াত মনসুর হবিবুুল্লাহের নাম ব্যবহার করছে তৃণমূল। সিপিএমের ওই কেন্দ্রের প্রার্থী, সাইদুল হক বলেন, “উনি যে তৃণমূলের সরকারের মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরীর স্ত্রী, তা না বলাটা অন্যায়ই নয়, প্রতারণা।” তবে মমতাজ বলেন, “স্বামীর পরিচয় দিতেই হবে এমন কোথায় বলা রয়েছে? আমার সমস্ত নথিতেও তো মমতাজ সংঘমিতাই লেখা রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy