Advertisement
E-Paper

মিলছে না বরাদ্দ আবাসন ভাতা, নালিশ শ্রম মন্ত্রকে

কেন্দ্রীয় সরকার নির্ধারিত আবাসন ভাতার থেকে অনেক কম হারে আবাসন ভাতা দিচ্ছে ইসিএল। এই অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই সরব ইসিএলের সবকটি শ্রমিক সংগঠন। তাদের অভিযোগ, বার বার আবেদন করার পরেও এই বিষয়ে ইসিএল কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

নীলোত্‌পল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৩২

কেন্দ্রীয় সরকার নির্ধারিত আবাসন ভাতার থেকে অনেক কম হারে আবাসন ভাতা দিচ্ছে ইসিএল। এই অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই সরব ইসিএলের সবকটি শ্রমিক সংগঠন। তাদের অভিযোগ, বার বার আবেদন করার পরেও এই বিষয়ে ইসিএল কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকে নালিশ জানানোর পরে সেন্ট্রাল ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ট্রাইবুনালে দায়ের হয়েছে দু’টি মামলা। ইসিএলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁদের সব বক্তব্য আদালতে জানাবেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৪ সালে জনসংখ্যার নিরিখে ভারত সরকার আসানসোল শহরকে ‘বি-টু সিটি’র মর্যাদা দেয়। এই পর্যায়ের শহরের মাপকাঠিতে ইসিএলের যে কর্মীরা আবাসন পাননি তাঁদের মূল বেতনের ১৫ শতাংশ হারে আবাসন ভাতা পাওয়ার কথা। কিন্তু কর্মীদের অভিযোগ, ১৯৯৬ সাল থেকে ইসিএল কর্তৃপক্ষ মূল বেতনের মাত্র ১০ শতাংশ হারে আবাসন ভাতা দিয়ে আসছে। একুশ শতকের গোড়া থেকেই এই নিয়ে সরব হয় ইসিএলের শ্রমিক সংগঠনগুলি। আইএনটিইউসি অনুমোদিত কোলিয়ারি মজদুর ইউনিয়ন (সিএমইউ) বকেয়া আবাসন ভাতা আদায়ের দাবিতে ২০০৪ সাল থেকে আন্দোলন শুরু করে। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ইসিএলের নরসামুদা কোলিয়ারির সব কটি শ্রমিক সংগঠনের প্রায় ৪৫০ জন কর্মী কেন্দ্রীয় হারে আবাসন ভাতার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছিল। অনশনের দ্বিতীয় দিন আসানসোলের তত্‌কালীন মহকুমা শাসকের আশ্বাসে কর্মীরা অনশন কর্মসূচি তুলে বৈঠকে বসেন। আন্দোলনকারী কর্মীদের দাবি, সেই বৈঠকে ইসিএল কর্তৃপক্ষ দেড় মাসের মধ্যে কর্মীদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কর্মীদের অভিযোগ, সেই বৈঠকের কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন হারে আবাসন ভাতা দেওয়ার বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি ইসিএল। কর্মীরা পুনরায় আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে শ্রম মন্ত্রকের আসানসোল শাখার অতিরিক্ত শ্রম অধিকর্তা (এএলসি) পুনরায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করেন। কিন্ত সেই বৈঠকও ভেস্তে যায়। তারপর এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

২০০৯ সালে নতুন জনসমীক্ষার নিরিখে আসানসোল ‘ওয়াই ক্লাস সিটি’তে উন্নীত হয়। এই মাপকাঠিতে কেন্দ্রীয় হার অনুযায়ী ইসিএলের আবাসন না পাওয়া কর্মীদের আবাসন ভাতা বেড়ে হয় মোট বেসিক বেতনের ২০ শতাংশ। কর্মীদের দাবি, এরপরেও ইসিএল কর্তৃপক্ষ পুরনো হারে ১০ শতাংশ আবাসন ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তেই অটল থাকে। পুনরায় বৈঠক করে শ্রম দফতর। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কোল ইন্ডিয়ার এক প্রতিনিধি। আন্দোলনকারী কর্মীদের দাবি, বৈঠকে কোল ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি জানান কর্মীদের দাবি নায্য। কিন্তু তারপরেও ইসিএল কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে বিষয়টি পুনরায় কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

শ্রম মন্ত্রক এই বিষয়ে দু’টি মামলা দায়ের করার জন্য ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ট্রাইবুনালকে নির্দেশ দিয়েছে। ১৫ শতাংশ হারে আবাসন ভাতা দেওয়ার বিষয় নিয়ে প্রথম মামলা দায়ের হয় ২০১০ সালের মে মাসে। আসানসোল ‘ওয়াই ক্লাস সিটি’তে উন্নীত হওয়ার পরে ২০ শতাংশ হারে আবাসন ভাতা পাওয়ার বিষয়ে দ্বিতীয় মামলাটি হয় ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর।

কোলিয়ারি মজদুর ইউনিয়নের নেতা সঞ্জয় মাজি জানান, দু’টি মামলা দায়ের হলেও ট্রাইবুনালের আসানসোল শাখায় বিচারক না থাকায় দেরিতে মামলা শুরু হয়। এরপর ইসিএলের পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে মামলায় বিলম্ব ঘটানো হচ্ছে। তাঁর দাবি, “ইসিএলের বিচারক বৈধ কাগজ ছাড়াই আদালতে উপস্থিত হয়ে আদালতে ভত্‌সিত হয়েছেন।” কর্মীদের এই দাবির বিষয়ে বাকি শ্রমিক সংগঠনগুলিও একমত। নরসামুদা কোলিয়ারির সিটু নেতা প্রভাত ঘাঁটি ও টিইউসিসি নেতা সুবোধ মণ্ডল জানান, ২০০৯ সালে আইএনটিইউসির সঙ্গে যৌথ ভাবে তারাও অনশনে বসেছিলেন। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেসের নেতা হরেরাম সিংহ বলেন, “কর্মীদের এই দাবির প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে।”

ইসিএলের সিএমডির কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। এই বিষয়ে যা বলার আমরা আদালতেই বলব।”

labour ministry building allowance nilotpal roychoudhury raniganj
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy