Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা খারাপ, পর্যটক নেই রনডিহায়

বছর কয়েক আগেও ছবিটা ছিল অন্যরকম। শীত পড়তেই ভিড় বাড়ত বুদবুদের রণডিহায় দামোদরের চরে। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বসত চড়ুইভাতির আসর। পর্যটকদের ভিড়ে গমগম করত গোটা এলাকা। দামোদরে চলত নৌকা। কিন্তু সে সব এখন স্মৃতি। গত কয়েক বছর ধরে ভরা শীতেও প্রায় খাঁ খাঁ করছে রনডিহা। কয়েকটি জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। টিউবওয়েল দিয়ে ঠিকমত জল পড়ে না। একদা জমজমাট রণডিহা এখন যেন পরিত্যক্ত এক জায়গা।

আসে না লোকজন। নৌকাবিহারও তাই বন্ধ। ছবি: বিকাশ মশান।

আসে না লোকজন। নৌকাবিহারও তাই বন্ধ। ছবি: বিকাশ মশান।

বিপ্লব ভট্টাচার্য
বুদবুদ শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০৩
Share: Save:

বছর কয়েক আগেও ছবিটা ছিল অন্যরকম।

শীত পড়তেই ভিড় বাড়ত বুদবুদের রণডিহায় দামোদরের চরে। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বসত চড়ুইভাতির আসর। পর্যটকদের ভিড়ে গমগম করত গোটা এলাকা। দামোদরে চলত নৌকা। কিন্তু সে সব এখন স্মৃতি। গত কয়েক বছর ধরে ভরা শীতেও প্রায় খাঁ খাঁ করছে রনডিহা। কয়েকটি জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। টিউবওয়েল দিয়ে ঠিকমত জল পড়ে না। একদা জমজমাট রণডিহা এখন যেন পরিত্যক্ত এক জায়গা। এই এলাকাটিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে অনেক বার আবেদন করেছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্তারা বার কয়েক এই এলাকা পরিদর্শন করেও গিয়েছেন। তবে কাজের কাজ কিছু হয়নি।

বুদবুদের চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রণডিহার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর। গাছগাছালিতে ভরা মনোরম পরিবেশের এই এলাকায় সেচ দফতরের একটি কার্যালয় ও একটি লকগেট রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর আগেও শীতকালে ছুটির দিনে এখানে চড়ুইভাতি করতে এসে জায়গার অভাবে ফিরে যেতেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করত চড়ুইভাতি মরসুমের উপর। দামোদরের চরে পান-সিগারেট, চা, খেলনার দোকান দিতেন অনেকে। কেউ কেউ ছোট গাড়ি নিয়ে পর্যটকের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতেন। কিন্তু এখন সে সব কিছুই নেই। গত বড়দিন ও পয়লা জানুয়ারিতেও ভিড় ছিল না এখানে। যাঁরা এসেছিলেন পরিকাঠামোগত সমস্যায় তাঁরাও বিরক্ত। কাঁকসার বাসিন্দা শুভদীপ সাহার ক্ষোভ, “দিন কয়েক আগে রণডিহায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। অবস্থা দেখে মন খারাপ হয়ে গেল। ঠিকমত পানীয় জল পাওয়া যায় না।এই এলাকাটিকে সুন্দর করার বহু আশ্বাস এসেছে। কিন্তু কাজ কিছু হচ্ছে না।”

পর্যটক না আসায় হতাশ নৌকাচালকরা। স্থানীয় নৌকাচালক রণডিহার সতীডাঙার বাসিন্দা বদন বাগদি, রতন রাজবংশী, মণীন্দ্র রাজবংশীদের আক্ষেপ, গত কয়েক বছর ধরে পর্যটক না আসায় তাঁদের রোজগার কমে গিয়েছে। পানাগড় এবং অনুরাগপুর ও নস্করবাঁধ হয়ে রণডিহা আসার দু’টি রাস্তাই খারাপ। মাঝেমধ্যেই ঘটে ছোটখাট দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা সমীর রায়ের আক্ষেপ, “শীতের মরসুমে কয়েক বছর আগে রণডিহায় তিলধারণের জায়গা থাকত না। কিন্তু এখন প্রায় ফাঁকাই থাকে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রনডিহায় একটি বিনোদন পার্ক তৈরি করা হোক। সেখানে বাহারি গাছ বসানো হোক। পাখি, হরিণ, ময়ুর রাখার ব্যবস্থা করা হোক।

রণডিহার ওই জায়গাটি প্রধানত সেচ দফতর দেখভাল করে। সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, “ওই এলাকায় আগে অনেক গাছ লাগানো ছিল। কিন্তু বেশির ভাগ গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। জায়গাটিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলিত ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হবে।” গলসি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “রণডিহাকে কীভাবে সাজিয়ে তোলা যায় সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE