পঞ্চায়েতের কাছ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ‘লিজ’ নেওয়া পুকুর পতাকা পুঁতে দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকসা ব্লকের বনকাটি পঞ্চায়েতের অযোধ্যা গ্রামে। বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ওই গোষ্ঠী। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ব্লক প্রশাসন।
ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম উপপ্রধান অজিত ঘোষ জানান, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সংস্কার করে ২০০৬ সালে পুকুরটি লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ‘নবজাগরণ স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী’র নামে গ্রামের দশ জন মহিলা তখন পুকুরটি ৫ বছরের জন্য ‘লিজ’ নিয়ে মাছচাষ শুরু করেন। ২০১১ সালে তাঁরা ‘লিজ’ পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন জানান। পঞ্চায়েতের নিয়ম মেনে মাছচাষ করায় তাঁদের আবেদন মঞ্জুর করে পঞ্চায়েত। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে বনকাটি পঞ্চায়েত বামেদের হাতছাড়া হয়। ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য শ্যামা বাগদি, রূপা বাগদিরা জানান, সমস্যা শুরু হয় তার পরেই। পুকুরে মাছ চাষে বাধা দিতে থাকেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। শ্যামাদেবীরা জানান, ২০১১ সালে নতুন করে ‘লিজ’ নিয়ে মাছের চারা ছেড়েছিলেন তাঁরা। সেই মাছগুলি আকারে বেশ বড় হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, সপ্তাহখানেক আগে স্থানীয় ওই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা পুকুরের সব মাছ ধরে নেন এবং পুকুরে দলীয় পতাকা পুঁতে দেন। শ্যামাদেবীদের অভিযোগ, “ওই পুকুরে আমরা আর মাছ চাষ করতে পারব না বলে ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। অনেক আশা নিয়ে আমরা মাছ চাষ করেছিলাম। কিন্তু সব মাছ ধরে নিয়েছেন স্থানীয় কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। আমরা বিপাকে পড়ে গিয়েছি।”
তৎকালীন বাম পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অজিতবাবু জানান, পঞ্চায়েতের নিয়ম মেনে লিজ নেওয়া পুকুর এ ভাবে দখল করা বেআইনি। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতে ক্ষমতার হাতবদল হতে পারে। কিন্তু নিয়ম তো রাতারাতি বদলায় না। এ ভাবে লিজ নেওয়া পুকুর গায়ের জোরে দখল করা যায় না।” রূপাদেবীরা বলেন, “আমরা আতঙ্কিত। বিহিত চেয়ে বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।” কাঁকসা ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য দেবদাস বক্সী জানান, এই ঘটনার কথা তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতের কাছে নিয়ম মেনে লিজ নেওয়া পুকুর কেউ দখল করতে পারে না। বনকাটিতে ঠিক কী হয়েছে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy