কর্মী সংগঠনের অফিসে বসে সাংগাঠনিক কাজ করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সেখানে গিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা। বুধবার বামপন্থী এই কর্মী সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভায় এই অভিযোগ করেন তাঁরা।
এ দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি সভাগৃহে অনুষ্ঠিত ওই সভায় কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আকাশ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “উপাচার্য আমাদের ইউনিয়ন অফিসে ঢুকে রীতিমত হুমকি দিয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন অফিসে উপস্থিত আমাদের নেতা-কর্মীদের নাম লিখে নিয়ে গিয়েছেন। বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কর্মী সংগঠনের অভিযোগের উত্তরে উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসংস্কৃতি ফেরানোর জন্য আমি প্রতিটি কর্মীর প্রতিই কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের সময়ে কোনও ইউনিয়ন অফিসে বসে টিভি দেখা, গল্পগুজব করা চলবে না । সেই কথা আগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি ওই ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে সাতজন কর্মচারীর নাম লিখে এনেছি। এঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা বিবেচনা করা হচ্ছে।”
কর্মচারী ইউনিয়নের বুধবারের সভায় ভিড় হয়েছিল ভালই। সভাটি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের সময়ে, দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজি কাউন্সিলের সচিব শ্যামাপ্রসাদ দে, বিজ্ঞান বিভাগীয় সচিব শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার, উপপরীক্ষা নিয়ামক রামবিলাস মহাপাত্র, ও সহকারী কর্মাধ্যক্ষ দেবমাল্য ঘোষ। শুভপ্রসাদবাবু দাবি করেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন লেখাপড়ার চেয়ে বাহ্যিক চাকচিক্যের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও ন্যাকের তালিকায় সারা দেশের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান ছিল ১৪তম। কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান ২৯তম। মান কেন কমে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষকে তার জবাবদিহি করতে হবে।” সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কর্মী সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধদেব চক্রবর্তী ও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় সংগঠন যুক্ত সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন ঘোষ। বুদ্ধদেববাবুর অভিযোগ, উপাচার্য কাজে যোগ দেওয়ার পরে তারা বারকয়েক তাঁর সঙ্গে বৈঠক করে জানান, তারা বিকেল তিনটের পরে সাংগঠনিক কাজকর্ম শুরু করেন। তাই তাঁরা তিনটের পরে অফিসে বসবেন। মঙ্গলবার সংগঠনের বার্ষিক সভা নিয়ে কয়েকজন সদস্য যখন আলোচনা করছিলেন, তখন উপাচার্য সেখানে গিয়ে ধমক দিতে শুরু করেন। জানতে চান, তারা কেন পাঁচটার আগে ইউনিয়ন অফিসে বসেছি। অথচ, ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মী সংগঠনই নিজেদের অফিসে বসে সাংগাঠনিক কাজ করেন।
এই ঘটনার পরে উপাচার্যকেই সমর্থন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল সমর্থক দু’টি কর্মী ইউনিয়ন। তাদের নেতারা একসুরে জানিয়েছেন, কাজের সময় ইউনিয়ন করা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy