খোলা হল ব্যানার। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী বিধির পরিপন্থী, তাই নিজেদের হোর্ডিং থেকে রাজনৈতিক প্রচার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিল আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। বৃহস্পতিবার বিধাননগর এলাকায় সিপিএম কয়েকটি হোর্ডিংয়ে ব্যানার লাগিয়েছিল। সিপিএমের যদিও দাবি, নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে লিখিত চুক্তিতে হোর্ডিংগুলি ভাড়া নেওয়া সত্ত্বেও ভিত্তিহীন যুক্তি দেখিয়ে তৃণমূল পরিচালিত এডিডিএ এক দিনের মধ্যে ব্যানার সরাতে বাধ্য করল। নির্বাচন কমিশনকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বলেও জানান দলের নেতারা।
দুর্গাপুর শহরের অভিজাত এলাকা বিধাননগরে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দাই বাড়ির দেওয়াল রাজনৈতিক প্রচারের জন্য ব্যবহার করতে দিতে চান না। আবার লাগোয়া ফুলঝোড়, অমরাবতী ইত্যাদি এলাকায় তাদের দেওয়াল লিখন তৃণমূল মুছে দিচ্ছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। তাই এ সব এলাকায় বিকল্প হিসেবে সিপিএম এডিডিএ-র হোর্ডিং ভাড়া নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এডিডিএ-র লিজ দেওয়া হোর্ডিং সিপিএম বিভিন্ন এজেন্সির কাছে ভাড়া নেয়। এখন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত হোর্ডিং পিছু প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তি হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিধাননগর এলাকায় কয়েকটি হোর্ডিংয়ে ব্যানার লাগায় সিপিএম।
কিন্তু শুক্রবার সকালে এজেন্সির তরফে জানানো হয়, এডিডিএ ব্যানার খুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সিপিএমের বিধাননগর-জেমুয়া লোকাল সম্পাদক পঙ্কজ রায়সরকার বলেন, “এমন কথা শুনে তাজ্জব হয়ে যাই। অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট চুক্তি করে নেওয়া হোর্ডিংয়ে প্রচার কেন নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের কবলে পড়ে, বুঝতে পারিনি।” তিনি জানান, দুপুরে এজেন্সির পক্ষ থেকে চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়। বিকেলে ব্যানার খুলে দেয় তারা। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হকও এই ঘটনার পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন।
এডিডিএ যদিও দাবি করেছে, বেছে বেছে সিপিএমের ব্যানার নয়, সব হোর্ডিং থেকে যে কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যানার খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের পক্ষ থেকেও বেশ কিছু হোর্ডিংয়ে ব্যানার টাঙানো হয়েছিল। সেগুলিও খুলে দেওয়া হয়েছে। সিপিএম নেতা পঙ্কজবাবুর অবশ্য দাবি, তারা আপত্তি তোলার পরেই তৃণমূলের ব্যানার খোলা হয়েছে। এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সিপিএমের অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। সব দলের ব্যানারই হোর্ডিং থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা করা হয়েছে, তা নিয়ম মেনেই।”
দেওয়াল লিখে নষ্ট করা হবে না, এই যুক্তি দেখিয়ে হোর্ডিং ভাড়া নিয়েছিল সিপিএম। এডিডিএ-র এমন অবস্থানের পরে তারা কি তবে ফের দেওয়াল লিখনের রাস্তাই নেবে? না কি অন্য কোনও প্রচারের পন্থা নেওয়া হবে? সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, দেওয়াল লেখার পথে যাওয়া হবে না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে জোর দিয়ে দেওয়াল না লেখার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy