পরপর দাঁড়িয়ে বাস। —নিজস্ব চিত্র।
ফের আগাম ঘোষণা ছাড়াই কাটোয়া-বর্ধমান রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিলেন বাসকর্মীরা। বৃহস্পতিবার দিনভর ওই রুটে কোনও বাস চলেনি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়ে বেশি টাকা খরচ করে যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে হয়। অনেকে বাস না পেয়ে ফিরেও যান।
কাটোয়া থেকে বর্ধমান পর্যন্ত সরাসরি ৯০টি বাস চলাচল করে। এ ছাড়াও বহরমপুর-বর্ধমান, চাকটা-বর্ধমান, আগরডাঙা-বর্ধমান ভায়া কাটোয়া কিংবা কাটোয়া-বর্ধমান ভায়া মালডাঙা, কৈথন-পঞ্চাননতলা মিলিয়ে আরও ৬০টি বাস চলাচল করে। এ দিন হঠাৎ করে প্রায় ১৫০টি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেন? বাসকর্মীদের দাবি, কাটোয়া-বর্ধমান রাজ্য সড়কের উপর নর্জা মোড়ে সেতু ভেঙে যাওয়ার পর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ঘুরে বর্ধমান পৌঁছতে হচ্ছে তাঁদের। বুধবার ঘুরপথে যাওয়ার সময় বর্ধমান থানার কলিগ্রামের কাছে একদল বাসিন্দা ওই রাস্তায় বাস চলতে দেওয়া হবে না বলে অবরোধ শুরু করেন। পরে বাসের উপর চড়াও হয়ে বাসকর্মীদের মারধর ও ভাঙচুড় করা হয় বলেও অভিযোগ। এমনকী স্থানীয় কুড়মুন থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে গেলে গ্রামবাসীরা তাদের মারধর করে বলেও পুলিশের দাবি। পরে বর্ধমান সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বিশাল বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এর প্রতিবাসেই বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে জানান বাসকর্মীরা।
কয়েক মাস আগেও আচমকা বাসকর্মীরা পরপর দু’বার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই সময় কাটোয়ার মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোনও অজুহাতে আচমকা বাস চলাচল বন্ধ রাখা যাবে না। প্রয়োজনে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এ দিন কাটোয়ার মহকুমাশাসক বলেন, “বাস কর্মচারীরা টেলিফোন মারফত সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। ঘটনাস্থল যেহেতু আমার এলাকা নয়, ফলে জেলায় বিষয়টি জানিয়েছি।” জেলা বাস মালিক সমিতির সদস্য তুষারকান্তি ঘোষ বলেন, “আমরা নই, বাস বন্ধ করেছেন কর্মীরা।” আর জেলা বাস কর্মচারীদের নেতা নারায়ণচন্দ্র সেন বলেন, “আমরা বাধ্য হয়েই নিরাপত্তার স্বার্থে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। মূল সড়ক দিয়ে বাস চালানো যাচ্ছে না, আবার ঘুরপথে গেলে মার খেতে হচ্ছে!” তাঁর দাবি, “পুলিশ যেখানে মার খাচ্ছে, সেখানে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?” যদিও বর্ধমানের আঞ্চলিক পরিবহণ কর্তা প্রদীপ মজুমদার বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকালে প্রশাসনের কর্তারা কলিগ্রামে গিয়ে বৈঠক করেছেন। সমস্যা মিটে গিয়েছে। আশা করছি, আজ, শুক্রবার থেকে বাস চলাচল করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy