শনিবার রবীন্দ্র সদনে হুল উৎসব। ছবি: রণজিৎ নন্দী
হুল দিবসেও জঙ্গলমহলে সমান্তরাল পথে হাঁটল রাজনীতি এবং আদিবাসী সমাজ। নানা অনুষ্ঠানে ঘুরেফিরে এল সেই বিভাজনের রাজনীতির প্রসঙ্গ।
পঞ্চায়েত ভোটের ফলের পর এ বার হুল দিবস পালনকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ও শাসক দলের পক্ষে বাড়তি তৎপরতা নজরে পড়ছিল। শনিবার হুল দিবসেও তা দেখা গিয়েছে। রাজ্যের আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ঝাড়গ্রাম জেলার কুলটিকরি ও কেচন্দায় দু’টি অনুষ্ঠানের আয়োজনে কোনও ত্রুটি ছিল না। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। তাঁরাও বললেন, আদিবাসী সমাজে বিভাজনের চেষ্টা চলছে। কুলটিকরির সরকারি অনুষ্ঠানে ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ভিড়ও হয়েছিলেন যথেষ্ট। শুভেন্দু বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়ার আইন করেছে বিজেপি সরকার। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের জন্য উন্নয়ন করছেন। বিভাজনের রাজনীতির মধ্যে না গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাত শক্তিশালী করুন।’’ কেচন্দার অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বার্তা, ‘‘সুখী জঙ্গলমহলের শান্তি নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না।’’
কেচন্দায় পার্থবাবুর পাশে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে আদিবাসী নেতা প্রবীর মুর্মুকে। প্রশাসন ও শাসক দলের সহযোগিতায় ‘তৃণমূলপন্থী’ পাল্টা একটি আদিবাসী সামাজিক সংগঠন ‘ভারত দিশম মাঝি মাডওয়া’ গঠন করেছেন প্রবীর। সেই সংগঠনের প্রধান পূর্ণচন্দ্র সরেন কেচন্দার সরকারি মঞ্চে বলেন, ‘‘একমাত্র এই রাজ্যেই আদিবাসীদের জন্য প্রকৃত কাজ হচ্ছে।’’
ঝাড়গ্রামের কুলটিকরিতে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র
দুপুর এবং বিকেলে সরকারি মঞ্চ থেকে যখন বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলছেন মন্ত্রীরা, তখন ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছিল শিলদায়। সেখানে সাঁওতালদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের তরফে হুল দিবস পালিত হয়। পারগানা মহলের সর্বোচ্চ নেতা (দিশম পারগানা) নিত্যানন্দ হেমব্রম অভিযোগ করেন, ‘‘আদিবাসী সমাজকে ভাঙার চেষ্টা করছে রাজ্য। সরকারের হাতে ক্ষমতা আছে। তাই সরকার নিজের মর্জি মতো কাজ করছে।’’ আদিবাসী এলাকাগুলিকে সংবিধানের পঞ্চম তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে জোট বাঁধার ডাক দেন পারগানা মহলের নেতৃত্ব।
বিকেলের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় সরকারি দু’টি অনুষ্ঠান। কিন্তু শিলদার অনুষ্ঠান চলে রাত পর্যন্ত। দু’পক্ষেরই দাবি, আদিবাসী সমাজ তাদের পক্ষে। স্থানীয় সূত্রের খবর, সরকারি অনুষ্ঠান দু’টিতে জমায়েতের ২৫ শতাংশ ছিল আদিবাসী মুখ। পাশাপাশি যত সময় গড়িয়েছে ভিড় বেড়েছে শিলদার অনুষ্ঠানে। সেখানে হাজির ছিলেন সাঁওতাল নেতা সিদো মুর্মুর বংশধর।
হুল দিবস পালনে পিছিয়ে ছিল না বিরোধীরাও। দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহরে বিজেপির জেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণের অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। হুল উৎসব পালিত হয় গোয়ালতোড়, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোডের বিভিন্ন এলাকায়।
মেদিনীপুর শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সামনে এক কর্মসূচিতে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy