Advertisement
E-Paper

ভোটের রানিবাঁধে ফের ঝরছে রক্ত

বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের অভিযোগ, আদিবাসী-প্রধান এলাকায় তাঁদের দলের ‘উত্থানে’ খেপে গিয়ে এলাকায় টানা সন্ত্রাস চালাচ্ছে শাসকদল। অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা তৃণমূলের নেতা তথা বিদায়ী সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ০৪:০৬

মাওবাদী জমানা কেটেছে। কিন্তু রক্তক্ষয় থামেনি বাঁকুড়ার রানিবাঁধে। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়া ইস্তক সেখানে তৃণমূল এবং বিজেপির টক্কর চলছে। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের অভিযোগ, আদিবাসী-প্রধান এলাকায় তাঁদের দলের ‘উত্থানে’ খেপে গিয়ে এলাকায় টানা সন্ত্রাস চালাচ্ছে শাসকদল। অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা তৃণমূলের নেতা তথা বিদায়ী সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর পাল্টা দাবি, পায়ের তলায় মাটি পেতে কোনও কোনও রাজনৈতিক দল আদিবাসীদের ‘ভুল’ বোঝাচ্ছে।

গত ১ মে জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য তথা তৃণমূলের এ বারের প্রার্থী মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু কর্মী-বৈঠক করছিলেন রানিবাঁধ লাগোয়া বারিকুলে। অভিযোগ, সেখানে দুষ্কৃতীদের হানায় জখম হন দুই কর্মী। তির বেঁধে আরও এক জনের গায়ে। তৃণমূল পরবর্তী কালে সে জন্য আঙুল তোলে বিজেপির দিকে। এ দিকে, মনোনয়ন পর্বের গোড়াতেই রানিবাঁধে খুন হয়ে যান বিজেপির প্রার্থী অজিত মু্র্মু।
সে ঘটনায় বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের দিকে।

রাজ্যে মাওবাদী তৎপরতার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল রানিবাঁধ। বিড়ির জন্য কেন্দুপাতা কুড়িয়ে, শালপাতার থালা, বাবুই ঘাসের দড়ি বানিয়ে সেখানে জীবন চলে বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের। প্রান্তিক সেই বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন কেন হয়নি, বাম জমানায় সে প্রশ্ন তুলে এলাকাবাসীর একাংশের সহানুভূতি পেত মাওবাদীরা। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তাদের রমরমার সেটা একটা বড় কারণ বলে মনে করেন জেলা রাজনীতির গতিপ্রকৃতির পর্যবেক্ষকদের অনেকে।

কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরে এলাকার ছবিটা বদলে যায়। মাওবাদীদের একাধিক শীর্ষ নেতা আত্মসমর্পণ করেন। তৃণমূল সরকারের আমলে জঙ্গল এলাকার গ্রামেও রাস্তাঘাট পাকা হয়েছে। দু’টাকা কিলোর চাল এবং ‘কন্যাশ্রী’, ‘সবুজ-সাথী’র মতো নানা সরকারি প্রকল্পে প্রাপক সংখ্যাও অনেক। যদিও বিজেপির দাবি, সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি আর নিজেদের লোককে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করেছে তৃণমূল। প্রতিকার চেয়ে তাই আদিবাসীরা এখন তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। তাই কি? আর এক বিরোধী পক্ষ বাম-শিবির কিন্তু অন্য কথা বলছে। সিপিএমের এক জেলা নেতা মেনে নিচ্ছেন, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে রানিবাঁধে তাঁদের অনেক নেতা-কর্মী ঘরছাড়া হন। পাশে দাঁড়ানোর মতো সংগঠন তখন দলের ছিল না। সেই সময়ে প্রতিরোধ করতে না পারার খেদ থেকেই এখন অনেকে বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন।

বামেদের এই ‘তত্ত্ব’ না মানলেও বিজেপি নেতা বিবেকানন্দবাবুর অভিযোগ, ‘‘রানিবাঁধ এলাকায় আমাদের সাংগঠনিক শক্তি দেখে ভয় পেয়েছে শাসক দল। মনোনয়নপর্বে মোটরবাইক নিয়ে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ দুষ্কৃতীরা গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঢুকে আমাদের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের হুমকি দিয়েছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘তলায় তলায় আঁতাঁত করেছে বিজেপি আর বামেরা। তবে জঙ্গলমহলের মানুষ ও আদিবাসীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজের পাশেই রয়েছেন। ব্যালট-বাক্সে তাঁরা সেটা দেখিয়ে দেবেন।’’

(চলবে)

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll TMC BJP Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy