যে সব জেলায় বিরোধীরা বেশি মনোনয়ন দিতে পেরেছিল, সোমবার সেই সব জেলাতেই ভোট বেশি পড়েছে। তুলনায় কম ভোট পড়েছে সেই সব জেলায়, যেখানে বিনাযুদ্ধে অধিকাংশ আসনে জয়পরাজয়ের নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। তবে সব মিলিয়ে ভোট পড়ার হার আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনগুলির তুলনায় খানিকটা কম বলেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর।
বিরোধীরা অবশ্য লড়াইয়ের জেলাগুলিতে ভোটের হার বেশি হওয়ার নেপথ্যে শাসক দলের ভোট লুঠের তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। সেই অভিযোগ উড়িয়ে শাসক দলের পাল্টা ব্যাখ্যা, যে সব জায়গায় অধিকাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হয়ে গিয়েছে, সেখানে ভোটারদের আগ্রহ কম ছিল। সেই কারণে ভোট কম পড়ে থাকতে পারে।
কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ৩৪% আসনে লড়াই না হওয়ায় এ বার দেড় কোটি ভোটারের ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল না। যে ৪৮ হাজার আসনে ভোট হয়েছে, সেখানে ভোটার ছিল ৪ কোটি ১৩ লক্ষ। গড়ে ভোট পড়েছে ৮২.১৩%। মনোনয়নের পরিসংখ্যান বলছে, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ আসনেই বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পেরেছিলেন। প্রচারেও শাসক দলের সঙ্গে তাঁরা ছিলেন সেয়ানে সেয়ানে। দেখা যাচ্ছে, এই জেলাগুলিতে ভোট পড়েছে রাজ্যের গড় ভোট পড়ার হারের চেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: ‘অশান্ত বাংলায় নিহত গণতন্ত্র’, পঞ্চায়েত নিয়ে চড়া আক্রমণে মোদী
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, ‘‘ওই জেলাগুলিতে ভোটাররা উৎসাহ নিয়ে ভোট দিচ্ছিলেন। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে শাসক দলের গুন্ডা বাহিনী একের পর এক বুথে শ’য়ে শ’য়ে ছাপ্পা দিয়েছে। ফলে ভোটের হার বেড়েছে।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও মনে করেন, ‘‘তৃণমূলের লুটেরা বাহিনী অবাধে ভোট লুট করার ফলেই ভোটের হার বেড়ে গিয়েছে। এটাই আমাদের প্রাথমিক মূল্যায়ন।’’
ভোট পড়ল যেমন
জেলা শতাংশ
ঝাড়গ্রাম ৮৪.৯৩
পুরুলিয়া ৮৫.০৬
আলিপুরদুয়ার ৮২.২২
পূর্ব মেদিনীপুর ৮৫.১৩
মালদহ ৮৩.১৫
যদিও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘আমরা যদি ভোট লুঠই করব, তা হলে আমাদের এত লোক মারা গেল কী করে? মানুষ উৎসাহ নিয়ে ভোট দিয়েছে। অবাধে ভোট হয়েছে। তাই কয়েকটি জেলায় ভোট পড়ার হার বেশি।’’
বীরভূম, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা কিংবা উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলায় অধিকাংশ আসন বিনা ভোটে জিতে নিয়েছে শাসক দল। দেখা যাচ্ছে, এই জেলাগুলির যে সামান্য অংশে ভোট হয়েছে সেখানে গড়ে ৮০%-এর কম ভোট পড়েছে। পার্থবাবু অবশ্য মনে করেন, ‘‘বিরোধীরা যেখানে প্রার্থীই খুঁজে পায়নি, সেখানকার ফলাফল তো ভোটারদের জানাই ছিল। তাই তারা সে ভাবে বুথমুখো হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy