E-Paper

গোপন ডেরায় রোহিঙ্গা? প্রশ্ন শুনেই চুপ স্থানীয়েরা

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শেখ শাহজাহানের মেছোভেড়ির গোপন আস্তানায় কী আছে বা কে আছে, বলা কঠিন। তাঁদের দাবি, পুলিশও ওই এলাকা এড়িয়ে চলে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪৭
sandeshkhali

সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। —ফাইল চিত্র।

ওঁরা আছেন, বলছেন অনেকেই। বিশেষ করে বিরোধীরা। কিন্তু কোথায়? তখনই সব নিরুত্তর।

শুক্রবার সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপরে হামলায় রোহিঙ্গা যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরে বিজেপির একাধিক নেতা একই অভিযোগ করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এমন অভিযোগ উঠে থাকলে তার তদন্ত হওয়া উচিত। শনিবার পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি পুলিশ। তবে, স্থানীয়দের অনেকেরই ইঙ্গিত, ওঁদের থাকা অসম্ভব নয়।

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শেখ শাহজাহানের মেছোভেড়ির গোপন আস্তানায় কী আছে বা কে আছে, বলা কঠিন। তাঁদের দাবি, পুলিশও ওই এলাকা এড়িয়ে চলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরবেড়িয়ার এক তৃণমূল নেতার কথায়, “সুন্দরবনের নদীপথ দিয়ে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া ও আশপাশের গ্রামে কারা এসে পৌঁছচ্ছে, সেখান থেকে কোথায় কোথায় যাচ্ছে— পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা খুঁজে দেখুন।” তাঁর বক্তব্য, “এলাকার মানুষের প্রাণের ভয় আছে। তারা এই নিয়ে বিশেষ কিছু বলবে না। গোপন আস্তানার কথাও বলবে না।”

সরবেড়িয়ার জনা কয়েক বাসিন্দার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে জানা গেল, শাহজাহানের মদতে মাতলা নদী পার হয়ে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগ বহু দিন ধরেই রয়েছে। সম্প্রতি শুভেন্দুও এই নিয়ে সরব হয়েছেন। এর পরে বিশদ জানতে চাইলে সরবেড়িয়ার এক বাসিন্দা ফোন কেটে দেন। কয়েক জন বলছেন, শাহজাহানের ইটভাটাতেও খোঁজ করে দেখা যেতে পারে।

সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় রোহিঙ্গাদের উপস্থিতির কথা প্রথম ছড়ায় ২০১৮ সাল নাগাদ। শোনা যাচ্ছিল, শাহজাহান রোহিঙ্গাদের কাছে ‘ফরিস্তা’র মর্যাদা পেয়েছেন। সেই সময় শাহজাহান অবশ্য দাবি করেছিলেন, ‘‘কিছু দিন আগে আমি বাংলাদেশে গিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে টাকা বিলি করেছিলাম। সেই ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানোর পর আমাকে নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। এ পারে আমি কেন রোহিঙ্গাদের আনতে যাব?”

সেই সময়ে সরবেড়িয়া মোড়ে বিরাট দানবাক্সও দেখা গিয়েছিল। ২০১৮ সালের ১৫ মার্চের কথা। সেই দানবাক্সে লেখা ছিল, ‘রোহিঙ্গা নির্যাতিতাদের মুক্তহস্তে দান করুন’। যা দেখিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছিলেন, “রোহিঙ্গারা যে এই তল্লাটে রয়েছে, তা এই দানবাক্স দেখেই বুঝতে পারছেন।” কয়েক জন দূর থেকে রোহিঙ্গাদের আস্তানা দেখিয়েই সরে পড়েছিলেন। এর পরে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ন্যাজাটের ভাঙ্গিপাড়ায় তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে চার জন মারা যান। তিন জন ছিলেন বিজেপির, এক জন তৃণমূলের। বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই রোহিঙ্গা ছিলেন।

সন্দেশখালি থানার এক প্রাক্তন ওসি বলেন, “প্রথম যখন রোহিঙ্গাদের কথা সামনে আসে, তখন তদন্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তেমন কিছু পাওয়া যায়নি।” সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর দাবি, “এত সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্তে মোতায়ন রয়েছে। সবার চোখে ধুলো দিয়ে রোহিঙ্গারা সন্দেশখালি চলে এল! কেন্দ্রীয় সরকার কী করছে! সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Shahjahan Sheikh ED

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy