Advertisement
১১ মে ২০২৪
C V Ananda Bose

নতুন রাজ্যপালে ‘অনাস্থা’, ইঙ্গিত শুভেন্দুদের মন্তব্যে

রাজ্যপাল বোসের ভূমিকা তাঁরা যে ভাল চোখে দেখছেন না, এর আগে শুভেন্দু সেই মনোভাবের কথা জানিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে।

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বসু।

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বসু। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫১
Share: Save:

নতুন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বসুর ভূমিকায় তাঁরা যে সন্তুষ্ট নন, এ বার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যে প্রকাশ্যেই তার ইঙ্গিত মিলল। বিজেপির আর এক বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতিরও অভিযোগ, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ না করে রাজ্যপাল বরং মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের প্রশংসা করে চলেছেন। রাজ্যপাল বোসের ভূমিকা তাঁরা যে ভাল চোখে দেখছেন না, এর আগে শুভেন্দু সেই মনোভাবের কথা জানিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। এ বার তাঁদের সেই মনোভাব প্রকাশ্যে চলে আসায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস পাল্টা কটাক্ষ করে, রাজভবনকে দলীয় দফতরে পরিণত করাই বিজেপির অভ্যাস! সেটা আপাতত করা যাচ্ছে না বলেই তাদের রাগ!

শুভেন্দুর নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর বিস্ফোরণ-কাণ্ডের তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ জানাতে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক গিয়েছিলেন রাজ্যপালের কাছে। কিন্তু বিরোধী দলনেতা স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালের এখানে কিছু করার আছে বলে আমার মনে হয় না।’’ শুভেন্দুর আস্থা কেন্দ্রীয় সংস্থা আর আদালতে। দেশের প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এগরার বালিঘাইতে রবিবার দলীয় কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ওই বিস্ফোরণ নিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘এটা এনআইএ তদন্তের জন্য উপযুক্ত। হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। সন্ত্রাস কবলিত এলাকার মানুষ সুবিচার পাবেন বলে আদালতের উপরে আমার আস্থা রয়েছে। এবং এটা হবেই।’’

গত ২ ডিসেম্বর ভগবানপুর ব্লকের অর্জুননগর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নাড়ুয়াবিলা গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়ি বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে যায়। রাজকুমার-সহ মৃত্যু হয় তিন জনের। ঘটনার তিন সপ্তাহ পরেও পুলিশ ঠিকমতো তদন্ত করছে না, এই অভিযোগ নিয়েই গত ২৩ ডিসেম্বর রাজভবনে গিয়েছিলেন ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি। বিস্ফোরণ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি এবং ছবি রাজ্যপালের হাতে তুলে দেন তিনি। তার দু’দিনের মধ্যে বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালের উপরে কার্যত ‘অনাস্থা’ প্রকাশের পরে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথও সোমবার বলেছেন, ‘‘গোড়া থেকে বর্তমান রাজ্যপাল যে ভাবে শাসক দল এবং রাজ্য সরকারকে প্রশংসায় ভরিয়ে তুলছেন, তাতে হয়তো বিরোধী দলনেতা বিরক্ত। আমরাও দেখছি, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কী আর রাজ্যপাল কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন। উনি আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। বরং, তৃণমূলের দিকেই ছুটছেন!’’ তা হলে তিনি রাজ্যপালের কাছে গেলেন কেন? বিজেপি বিধায়কের জবাব, ‘‘রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল। তাই এলাকায় সন্ত্রাসের বিহিত চেয়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। যাবতীয় নথিও দিয়ে এসেছি।’’

বাংলায় জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন রাজ্য সরকারের সমালোচনায় নিয়মিত প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতেন। তার রেশ টেনে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি শাখা সংগঠন মানে বোঝে ইডি-সিবিআই আর দলের দফতর বলতে বোঝে রাজভবন! সেই হিসেব গোলমাল হলেই মাথা খারাপ হয়ে যায়! রাজ্যপাল হিসেবে ওরা ধনখড়কে দেখেছে, যিনি সকাল থেকে নানা রকম বলতেন! সেটাই তো শেষ কথা নয়। সংসদীয় গণতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো কোনও কিছুতেই আস্থা নেই বিজেপির।’’ রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরিও কটাক্ষ করেছেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা যে ভাবে চালাতে চাইছিলেন, হয়তো সে কথা শোনেননি রাজ্যপাল। তাই এ ধরনের মন্তব্য করছেন! আর আপাতত কেন্দ্রীয় সংস্থা-নির্ভর রাজনীতি করতে চাইছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

C V Ananda Bose Suvendu Adhikari BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE