এক দিকে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রবণতা বাড়ছে। এগিয়ে আসছেন মহিলারাও। অন্য দিকে, লোকসভা ভোটের সময়কার প্রবণতা বন্ধ হয়ে বিজেপি ধাক্কা খাচ্ছে। এই দুই ইঙ্গিতেই আপাতত স্বস্তি পাচ্ছেন সিপিএম নেতৃত্ব। নতুন উদ্যম পাচ্ছেন বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করার। জোড়া স্বস্তির তথ্য হাতে নিয়েই দলের গণসংগঠনগুলিকে পূর্ণ উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিল আলিমুদ্দিন।
আলিমুদ্দিনে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সদ্যসমাপ্ত পুরভোটের যে পর্যালোচনা রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, তাতেই স্বস্তির কিছু লক্ষণ দেখতে পাচ্ছেন দলীয় নেতারা। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, একমাত্র হাওড়া জেলাতেই (সেখানে অবশ্য একটিই পুরসভার ভোট ছিল) পুরভোটে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করতে পেরেছে বিজেপি। বাকি সর্বত্র বামেরাই দ্বিতীয় স্থানে। বেশির ভাগ জায়গাতেই দীর্ঘ দিনের রক্তক্ষরণ এ বার অন্তত বন্ধ হয়েছে। কলকাতার মতো শহরে লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় সামান্য হলেও ভোট বেড়েছে। কিছু জায়গায় বামেদের ফল ষথেষ্টই স্বস্তিকর। যেমন, উত্তরবঙ্গের মালবাজার পুরসভায় লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে প্রায় ৭% ভোট বেড়েছে বামেদের। এই সব তথ্যের প্রেক্ষিতেই এ দিন রাজ্য কমিটিতে রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, রাজ্যের বেশির ভাগ জায়গাতেই অন্যদের তুলনায় তৃণমূলের গণভিত্তি এখনও বেশি। কিন্তু তাতে কিছু ক্ষয় ধরছে বলেই শাসক দলকে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের পথে যেতে হচ্ছে। আর এই পুরভোটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, এ রাজ্যে বিজেপি কোনও বিকল্প নয়। এই তথ্য মাথায় রেখেই বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করার কথা বলেছেন সূর্যবাবু।
বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরাই তাঁদের এলাকায় পুরভোটে শাসক দলের নানা সন্ত্রাসের বিবরণ পেশ করেছেন। তবে তার আগে গোড়াতেই রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, এ বার পুরভোট সুষ্ঠু পরিবেশে হয়নি ঠিকই। তবু তার মধ্যেও স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ হয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। সেই প্রতিরোধে মহিলাদের অংশগ্রহণ যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। প্রত্যাশিত ভাবেই শিলিগুড়ির সাফল্যের কথা আলাদা করে উল্লেখ করেছেন তিনি। আর এর পাশাপাশিই গণসংগঠনগুলির জন্য রাজ্য সম্পাদকের দাওয়াই— এ বার থেকে তারা কী কাজ করেছে এবং কী করতে চলেছে, তার লিখিত খতিয়ান দিতে হবে রাজ্য কমিটিতে। এক বার রাজ্য কমিটিতে যে কর্মসূচির কথা বলা হচ্ছে, বাস্তবে তার রূপায়ণ কত দূর, তার হিসাব দিতে হবে পরবর্তী রাজ্য কমিটির বৈঠকে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমরা সাম্প্রতিক কালে বারবারই মূল্যায়ন করেছি, গণসংগঠনগুলির কাজ আশানুরূপ হচ্ছে না। এ বার থেকে তাদের কাজে এক ধরনের সার্বিক নজরদারি রেখে একটা ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy