Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
BJP

রাম-ধ্বনি: ‘গর্বিত’ বিজেপির যুব নেতারা

শুধু মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাঘাত সৃষ্টির জন্যই নয়, সুভাষচন্দ্র বসুর নামাঙ্কিত সরকারি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে এমন ঘটনা অনভিপ্রেত বলে মনে করেছেন অধিকাংশই।

ভিক্টোরিয়ায় নেতাজির জন্মোৎসব পালনের সরকারি অনুষ্ঠানে সেই বিতর্কিত স্লোগান।

ভিক্টোরিয়ায় নেতাজির জন্মোৎসব পালনের সরকারি অনুষ্ঠানে সেই বিতর্কিত স্লোগান। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৭:১৬
Share: Save:

ভিক্টোরিয়ায় নেতাজির জন্মোৎসব পালনের সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার সময়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে বিজেপির যুব মোর্চার নেতারা ‘গর্বিত’।

শনিবার ওই ঘটনার পরে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে বিষয়টির নিন্দা করা হয়েছে। শুধু মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাঘাত সৃষ্টির জন্যই নয়, সুভাষচন্দ্র বসুর নামাঙ্কিত সরকারি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে এমন ঘটনা অনভিপ্রেত বলে মনে করেছেন অধিকাংশই। এমনকি, বিজেপিরও কেউ কেউ একই মত পোষণ করেন।

তবে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টির মধ্যে দোষের কিছু দেখেননি। তাই সংশ্লিষ্ট যুব নেতারাও সোমবার অকুতোভয়ে প্রকাশ্যে এসে ঘোষণা করেছেন, ‘‘ওই স্লোগান দিয়ে ভুল করা তো দূরের কথা, আমরা গর্বিত।’’ যাঁরা ওই স্লোগান দিয়েছিলেন বলে চিহ্নিত করা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি তরুণজ্যোতি তিওয়ারি, সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় এবং কোষাধ্যক্ষ কৌশিক ঘোষ।

এ দিনই হুগলির পুরশুড়ায় এক জনসভায় মমতা তাঁর সে দিনের বক্তৃতা বয়কটের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সামনে আমাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে ডেকে এনে কাউকে থাপ্পড় মারব বলা বাংলার সংস্কৃতি নয়।’’ যাঁরা সে দিন সভাস্থলে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘নেতাজি-নেতাজি বললে স্যালুট জানাতাম। কিন্তু যেটা করেছ, বাংলাকে অপমান করেছ, নেতাজিকে অপমান করেছ।’’ এই সূত্রেই তিনি লোকসভা ভোটের আগে বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গ মনে করান। তাঁর ঘোষণা, ‘‘রাজনীতি দিয়ে এর প্রত্যুত্তর দেব।’’

অন্য দিকে, ভিক্টোরিয়ায় স্লোগান-কাণ্ডের একটি মুখ যুব বিজেপির কৌশিক বলেন, ‘‘জয় শ্রীরামকে রাজনৈতিক স্লোগান বলা হলে জয় বাংলাকে বাংলাদেশের স্লোগান বলা হবে না কেন?’’ আর এক জন বাপ্পার দাবি, ‘‘রামের ভূমিতেই সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম। রাম হলেন সার্বভৌমত্বের প্রতীক।’’ শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘জয় শ্রীরাম বলতে এ দেশে কারও যন্ত্রণা হওয়ার কথা নয়। তাতে কারও ধর্মনিরপেক্ষতায় আঘাত লাগবে না। ওটা রাজনৈতিক স্লোগান নয়। আমরা মনে করি, রাম এ দেশের গর্ব। আমার বিশ্বাস মমতা দিদিরও রামের উপরে বিশ্বাস আছে।’’

মমতার বক্তৃতা না করা যে তাঁদের কাছে ‘উল্লাসের বিষয়’, তা স্পষ্ট করে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁর মন্তব্য, ‘‘রামনামে তৃণমূলের ভূতেরা পালিয়ে যাবে। যেমন করে নেতাজির অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে মমতা পালিয়ে গিয়েছেন।’’ কয়েক দিনের মতো এ দিনও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘রামনাম শুনতে যে কারও কষ্ট হয়, তা আমাদের জানা ছিল না।’’

বিজেপি শিবিরে এই সামগ্রিক প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘যাঁরা নাথুরাম গডসের পুজো করেন, তাঁদের কাছে অন্য কিছু আশাই করা যায় না। এখন বাংলার মাটি এই দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলেছে। উপযুক্ত জবাবও দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE