Advertisement
E-Paper

‘ব্ল্যাক স্পট’ সামলাতে উদ্যোগী পুলিশ

কুচকুচে কালো জাতীয় সড়কে ‘ব্ল্যাক স্পট’! যেখানে ছোটখাটো দুর্ঘটনা থেকে প্রাণহানি অব্যাহত। গ্রামীণ হাওড়ার মুম্বই রোডের এমনই চার জায়গায় ‘ব্ল্যাক স্পট’ তুলতে এ বার উদ্যোগী হয়েছে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। অর্থাৎ, শুরু হয়েছে দুর্ঘটনা এড়ানোর প্রক্রিয়া।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০০:৩০
ট্রাফিক নেই। চলছে পারাপার। মুম্বই রোডে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ট্রাফিক নেই। চলছে পারাপার। মুম্বই রোডে তোলা নিজস্ব চিত্র।

কুচকুচে কালো জাতীয় সড়কে ‘ব্ল্যাক স্পট’!

যেখানে ছোটখাটো দুর্ঘটনা থেকে প্রাণহানি অব্যাহত। গ্রামীণ হাওড়ার মুম্বই রোডের এমনই চার জায়গায় ‘ব্ল্যাক স্পট’ তুলতে এ বার উদ্যোগী হয়েছে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। অর্থাৎ, শুরু হয়েছে দুর্ঘটনা এড়ানোর প্রক্রিয়া।

রাজ্য পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কে মৃত্যুফাঁদগুলিকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। গোটা রাজ্য এই ধরনের জায়গা আপাতত ২৫। রাজ্য পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সমীক্ষা চালিয়ে এই ধরনের ২৫টি বিপজ্জনক মোড়, ক্রসিং, সেতু কিংবা স্টপ চিহ্নিত করেছে। রাজ্য পুলিশের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ‘ব্ল্যাক স্পট’ রয়েছে বর্ধমানের গলসি এবং হাওড়ার ডোমজুড় থানার অন্তর্গত অঙ্কুরহাটি চেক পোস্ট, শলপ ক্রসিং, পাকুড়িয়া মোড় এবং সাঁকরাইলের ধুলাগড়ি টোলপ্লাজাতে।

জেলা পুলিশের হিসেবে হাওড়ার ওই চার ‘ব্ল্যাক স্পটে’ গত বছর ৫৩টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন মারা গিয়েছেন। আহত হন ২৬ জন। এ বছরের দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান পুলিশ এখনও জানাতে পারেনি। তবে, ইতিমধ্যেই কয়েক জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

তাই এ ভাবে প্রতি বছর ওই চার ‘ব্ল্যাক স্পটে’ দুর্ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকটি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে চারটি জায়গার মধ্যে অঙ্কুরহাটিতে উড়ালপুল তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। অঙ্কুরহাটি সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, জাতীয় সড়কের সংযোগকারী রাস্তাগুলির পাশে সাদা দাগ আঁকা হচ্ছে। সেই দাগের উপর লাগানো হচ্ছে ‘রিফ্লেক্টর’। কয়েকটি জায়গায় হাম্পের উপর লাল আলো লাগানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, আগের তুলনায় ট্র্যাফিক পুলিশ বেশি ক্ষণের জন্য মোতায়েন করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লক স্তরেও উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও নানা ভাবে প্রচার চালানো হবে।

জেলার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘ওই চার জায়গায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সাজানো হবে। উড়ালপুল তৈরি হবে। রাজ্য সরকারের নির্দেশে নিরাপত্তা পরিষদ তৈরি করে নজরদারি চালানো হবে। সেই কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে দুর্ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, জাতীয় সড়কে ‘ব্ল্যাক স্পট’ পরিবর্তনশীল বিষয়। এক বছর যে জায়গায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে, পরের বছর সেখানে দুর্ঘটনা বেশি না ঘটে অন্য জায়গাতেও হতে পারে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ব্ল্যাক স্পটগুলিকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ওই এলাকাগুলিতে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।’’

কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর দেশে গড়ে দেড় লক্ষ মানুষ পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। দুর্ঘটনা এবং তাতে প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে বেশ কয়েক বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টও। পথ দুর্ঘটনা কমাতে রাজ্য সরকারগুলিকে বারবার বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পরিবহণ সচিবকে মাথায় বসিয়ে রাজ্য স্তরে ‘রোড সেফটি কাউন্সিল’ বা পথ-নিরাপত্তা পরিষদ তৈরি হয়েছে। জেলা স্তরেও নিরাপত্তা পরিষদ তৈরির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, কমিটি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে জাতীয় সড়ক দেখভালের বিষয়ে তাদের ভূমিকা অনেকটাই কম। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় না বাড়ালে শুধু কমিটি গড়ে কোনও লাভ হবে না।

ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি ইতিমধ্যেই অঙ্কুরহাটি চেক পোস্ট, শলপ ক্রসিং এবং পাকুড়িয়া মোড়ে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করার জন্য জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়েছে। সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তপন পাল জানান, সম্প্রতি আলমপুরে পথ নিরাপত্তা শিবির করা হয়েছিল। ফের তা করা হবে।’

এখন দেখার এই সব নতুন উদ্যোগে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি বন্ধ হয় কিনা।

Black spot National Highway howrah sukesh jain Domjur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy