মশা মারার অভিযানে কাউন্সিলরদের একাংশ ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করায় বিতর্ক এখন তুঙ্গে। ব্লিচিং পাউডারে যে মশা মরে না, সে কথা একাধিক বার সামনে এসেছে। কিন্তু শুধু কি তা-ই? ব্লিচিংয়ের অপব্যবহারের সঙ্গে কি শুধুই টাকার অপচয়ের বিষয়টিই যুক্ত? বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সমস্যা আরও গভীরে। যথেচ্ছ ব্লিচিং ছড়ালে আদতে ক্ষতি হচ্ছে বাস্তুতন্ত্রেরই।
পতঙ্গবিদ অমিয়কুমার হাটি বলছেন, ‘‘ব্লিচিং ব্যবহারে টার্গেট মশার বাইরে অনেক নন-টার্গেটও প্রাণীও মারা যায়। সেটা বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। এর পরিণাম সুদূরপ্রসারী হতে পারে।’’ কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাসের কথায়, ‘‘বারবার বলার পরেও ডেঙ্গি অভিযানে ব্লিচিং পাউডারের ব্যবহার দুর্ভাগ্যজনক।’’
সম্প্রতি এ রাজ্যে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার নিয়ে একটি গবেষণা হয়েছিল। ওই গবেষণায় এক লিটার জলে ২০০ মিলিগ্রাম, ৪০০ মিলিগ্রাম ও ৮০০ মিলিগ্রাম ব্লিচিং পাউডার মেশানো হয়েছিল। অর্থাৎ জলে ব্লিচিং পাউডারের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২০০, ৪০০ ও ৮০০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)। গবেষণাটিতে দেখা যায়, ৮০০ পিপিএম মাত্রার ব্লিচিং মিশ্রণ ব্যবহার করলে কিউলেক্স মশা মারা গিয়েছিল। কিন্তু এডিস মশা মরেনি। আরও দেখা গিয়েছিল, ডেঙ্গির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘টার্গেট’ মশা মারতে গিয়ে পরিবেশের অনেক ‘নন-টার্গেট’ও ধ্বংস হয়েছিল। ৮০০ পিপিএম মাত্রার থেকে অনেক কম মাত্রার ১০০-২০০ পিপিএমেই কেঁচো, শামুক, এমনকি, মশার লার্ভা ভক্ষণকারী গাপ্পি, গাম্বুসিয়া, তেচোখা মাছ মরে যাচ্ছে। তাও মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে। অর্থাৎ তারা হল ডেঙ্গি-যুদ্ধের আনুষঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি।