Advertisement
০৬ মে ২০২৪

কাটমানি কাণ্ডে মারধর, বিভিন্ন জেলায় পোস্টার

এর পরেই তালিকায় তাঁর নাম ওঠে বলে দাবি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার ঘুটিয়ারি শরিফ গাঁথি এলাকার বাসিন্দা হায়বত মোল্লার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন 
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৪৬
Share: Save:

গ্রাম পঞ্চায়েত, সরকারি অফিসে হত্যে দিয়েও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ধর্না দিয়েছিলেন। তার পরেই নড়াচড়া শুরু হয় প্রশাসনিক স্তরে।

এর পরেই তালিকায় তাঁর নাম ওঠে বলে দাবি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার ঘুটিয়ারি শরিফ গাঁথি এলাকার বাসিন্দা হায়বত মোল্লার। অভিযোগ, সেই ঘরের জন্যও ২০ হাজার দাবি করেছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। তা দিতে না চাওয়ায় হায়বতকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবর রহমান সর্দারের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতের ঘটনা। থানায় অভিযোগও হয়েছে। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। অভিযোগ, স্বামীকে মারধরের হাত থেকে বাঁচিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন হায়বতের স্ত্রী খাদিজা বিবিও।

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মুজিবর বলেন, ‘‘উনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন। সরকারি প্রকল্পে ঘরের জন্য তার নাম আসেনি। ফলে টাকা চাওয়ার কোন প্রশ্নই নেই।’’ এই বিষয়ে ক্যানিং ১ ব্লকের বিডিও নীলাদ্রিশেখর দে বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি ওই ব্যাক্তির নাম উপভোক্তার তালিকায় নেই। তবে উনি যদি লিখিত অভিযোগ করেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কাটমানি কাণ্ডে জেলায় জেলায় গোলমাল অবশ্য অব্যাহত রইল রবিবারেও। অভিযোগের পাশাপাশি টাকা ফেরত দেওয়ারও ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের শিবলুনে। পোস্টার পড়ল ব্যারাকপুরে, হুগলির উত্তরপাড়া পুর এলাকায়।

শিবলুনে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়া হবে আশ্বাস দিয়ে ‘কাটমানি’ নিয়েছিলেন তাঁরা। শনিবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা মোট ৪০ হাজার টাকা কাটমানি ফেরত দিয়েছেন বলে প্রকল্পের উপভোক্তারা জানিয়েছেন। অন্য দিকে, বিজেপির দাবি, আউশগ্রামের ছোড়া কলোনিতে গ্রামবাসীর সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকে তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সঞ্জিত বিশ্বাস ‘কাটমানি’ নিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। যদিও সঞ্জিতবাবুর দাবি, ‘‘গ্রামের কিছু লোক চাপ দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছেন।’’

কাটমানি ফেরত কাণ্ডে পোস্টার পড়েছে ব্যারাকপুর পুরসভার মহিলা কাউন্সিলর অর্পিতা বসু রায়ের বিরুদ্ধেও। এই বিষয় নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে বিজেপি-তৃণমূলে। তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত হলেও ভোটের ফল প্রকাশের পরে তিনি যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। রবিবার সকালে ব্যারাকপুর তালবাগান রোড, নোনাচন্দন পুকুর এলাকায় দেওয়ালে দেওয়ালে এই পোস্টার পড়ে।

সেখানে অর্পিতা এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে রাস্তায় বেআইনি দোকান বসানো, বেআইনি বাড়ি অনুমোদনের বিনিময়ে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। অর্পিতা বলছেন, ‘‘কোনও দোকান আমি বসাইনি। সব নিজে নিজে বসেছে। আর প্রোমোটারদের অনুমোদন আমি দিই না। এটা তো পুরপ্রধান করেন!’’ পুরপ্রধান উত্তম দাস বলেন, ‘‘বিজেপিতে গিয়ে ওরা কল্কে পাচ্ছে না বলে এই ধরনের ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে।’’

রবিবার হুগলির উত্তরপাড়াতেও পুরকর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে। উত্তরপাড়া মাখলার বিজেপির তফসিলি মোর্চার তরফে সাঁটানো পোস্টারগুলিতে দাবি করা হয়েছে, আবাসন ও শৌচালয়— কাটমানি ছাড়া কোনও কাজই হয় না।

উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘প্রচারের আলোয় এসে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য এ সব পোস্টার ঝোলানো হচ্ছে। নথি-সহ নির্দিষ্ট অভিযোগ আমার কাছে আনুন। অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Bribery Scandal Bribe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE