Advertisement
০৫ মে ২০২৪
শুরু প্রক্রিয়া

নিলামে চড়বে সিঙ্গুরের টাটা প্রকল্পের ভাঙা শেড

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো ইতিমধ্যেই সিঙ্গুরে টাটাদের কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বার ওই প্রকল্পের ভাঙা শেড, লোহা (স্ক্র্যাপ) নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হল। রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম ইতিমধ্যেই সে সংক্রান্ত নোটিস জারি করেছে।

প্রকল্প এলাকার মধ্যে ডাঁই করে রাখা কারখানার ভাঙা শেড, লোহার যন্ত্রাংশ। ছবি: দীপঙ্কর দে।

প্রকল্প এলাকার মধ্যে ডাঁই করে রাখা কারখানার ভাঙা শেড, লোহার যন্ত্রাংশ। ছবি: দীপঙ্কর দে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো ইতিমধ্যেই সিঙ্গুরে টাটাদের কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বার ওই প্রকল্পের ভাঙা শেড, লোহা (স্ক্র্যাপ) নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হল। রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম ইতিমধ্যেই সে সংক্রান্ত নোটিস জারি করেছে।

হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “আমাদের উপর দায়িত্ব বর্তেছিল ওই শেড ভেঙে দেওয়ার। সেই কাজ শেষ করে আমরা শিল্পোন্নয়ন নিগমকে জানিয়ে দিয়েছি। এরপরই নিগম ওই লোহা এবং টিন নিলামের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ই-নিলাম হবে। নোটিস জারি হয়েছে।”

কিন্তু নিলাম হলে সেই টাকা কে পাবে? এর উত্তর এখনও প্রশাসনের কাছ থেকে মেলেনি। জেলাশাসক জানান, টেন্ডার এবং সেই সংক্রান্ত সমস্ত প্রক্রিয়ার বিষয়ে নিগমই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে, প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত নিলাম থেকে প্রাপ্ত টাকা নিগমের হেফাজতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত সরকার এ ব্যাপারে আদালতের মতামত নেবে। কেননা, ওই শেড এবং কারখানা তৈরির সমস্ত কাজই টাটাদের তত্ত্বাবধানে হয়েছিল।

নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, টেন্ডার ডেকে আইন মাফিক ওই ‘স্ক্র্যাপ’ সরানোর কাজ শুরু হবে। টেন্ডারে অংশ নেওয়া বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই দফায় দফায় ওই এলাকায় গিয়ে ‘স্ক্র্যাপ’ দেখে এসেছেন। যে সংস্থার সঙ্গে নিগমের চুক্তি চূড়ান্ত হবে, সেই সংস্থাই ওই ‘স্ক্র্যাপ’ সরিয়ে নিয়ে যাবে।

গত বছর অগস্টের শেষে সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ অবৈধ, এই রায় দিয়ে রাজ্য সরকারকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে কৃষকদের হাতে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই জমি চাষযোগ্য করে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তার পরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়ে যায় কাজ। কারখানার ৯টি শেড ভাঙতে রাজ্য সরকার ২২টি সংস্থাকে নিয়োগ করে। গত নভেম্বরে সেই কাজ শেষ হয়। শেডগুলি ভেঙে পাহাড় প্রমাণ টিন বের হয়। শেডগুলি যে সব লোহার বিমের উপর দাঁড়িয়ে ছিল তার পরিমাণও বিপুল। ওই কাজে ডিনামাইট ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণও ঘটানো হয়েছিল।

যাবতীয় ‘স্ক্র্যাপ’ বর্তমানে‌ ডাঁই করে রাখা রয়েছে ওই প্রকল্প এলাকার পাশে শিল্পোন্নয়ন নিগমের নিজস্ব জমিতে। প্রথম দিকে সেখান থেকে লোহা, টিন চুরি হতে থাকায় এলাকাটি টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। ওই ‘স্ক্র্যাপ’ না-সরালে নিগম জমিটি নিজস্ব কাজে ব্যবহারও করতে পারছে না। তা ছাড়া ওই মালপত্র সরানোর কাজ সম্পূর্ণ হলে সিঙ্গুরে প্রকল্প এলাকায় সরকারি স্তরে কাজের আপাতত একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে। সে জন্যই নিলামের উদ্যোগ। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, আপাতত লক্ষ্য, প্রকল্প এলাকার জমি যাতে চাষিরা আরও বেশি করে চাষের কাজে ব্যবহার করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TATA Singur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE