Advertisement
E-Paper

‘আগের বার ভোটে লাইন করিয়েছিল বিএসএফ’! সুকান্তের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা

গত লোকসভা ভোটে বালুরঘাট আসন তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। সাংসদ হন সুকান্ত মজুমদার। পরে সেই সুকান্তকেই রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেয় গেরুয়া শিবির।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৭
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বালুরঘাট আসনে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ভূমিকা ছিল বলে পরোক্ষে অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই মমতা বলে দিলেন, এ বার তেমন হোক তা তিনি চান না। মঙ্গলবার রায়গঞ্জের সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি শেষ করে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেই মঞ্চ থেকেই তিনি বিএসএফের বিরুদ্ধে ভোটের লাইন ‘ম্যানেজ’ করার অভিযোগ তুললেন।

মমতা বলেন, ‘‘আমার কাছে ইনফরমেশন (তথ্য) আছে। আগের বার বালুরঘাটে ভোটের লাইন করিয়েছিল বিএসএফ।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘এ বার যদি শুনি.... মনে রাখবেন ইলেকশন চলে যাবে। আমরা কিন্তু থাকব। তখন কিন্তু সেই কথাটা আমারও মনে থাকবে।’’ মমতার কথায়, ‘‘ভোট করায় নির্বাচন কমিশন, ডিএম (জেলাশাসক), এসপিরা (পুলিশ সুপাররা)। সেখানে ওরা (বিএসএফ) গিয়ে লাইন ম্যানেজ করে। কে দিয়েছে এই অধিকার?’’

প্রত্যাশিত ভাবে বিজেপিও মমতার কথার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাজ্য বিজেপির অন্যতম নেতা তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মস্তানদের মতো আচরণ করছেন। উনি বিএসএফকে বলছেন নির্বাচনের পর উনি থাকবেন, দেখে নেবেন? কী দেখবেন? এই কথা যদি কোনও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁকে মস্তান ছাড়া কী বলব?’’

সোমবার কোচবিহারের সরকারি কর্মসূচি থেকেও বিএসএফের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘সীমান্তবর্তী এলাকায় বিএসএফ আইডেন্টিটি কার্ড দিতে চাইছে।’’ মানুষকে সাবধান করে মমতা বলেছিলেন, ‘‘আপনারা ওই কার্ড কেউ নেবেন না। তা হলে এনএরসির মধ্যে পড়ে যাবেন।’’ বালুরঘাটের কর্মসূচি থেকেও মমতা একই কথা বলেছেন। পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসককে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘‘যাঁরা এ পার থেকে ও পারে কাজে যান, তাঁদের পারমিট কার্ড আপনি দেবেন। বিএসএফের কার্ড নেওয়ার দরকার নেই।’’

গত লোকসভা ভোটে বালুরঘাট আসন তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। সাংসদ হন সুকান্ত মজুমদার। পরে সেই সুকান্তকেই ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক পরেই দিলীপ ঘোষের জায়গায় রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেয় গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার সেই সুকান্তের এলাকাতে গিয়েই বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন মমতা। ২০১৯ সালে বালুরঘাটের লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে চারটিতে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। তিনটিতে এগিয়ে থেকেও মোট ভোটের ব্যবধানে লোকসভা আসনে জিতেছিলেন শুভেন্দু। ২০২১ সালের বিধানসভায় ছবিটা বদলে যায়। তৃণমূল চারটি এবং বিজেপি তিনটিতেই জেতে। কিন্তু গোটা লোকসভায় প্রায় ৯০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকে তৃণমূল। তার পর পুরসভা ভোটে ও পঞ্চায়েত ভোটে ঘাসফুলের আধিপত্যই দেখা গিয়েছিল। এমনকি সুকান্তের বাড়ি বালুরঘাট পুরসভার যে ওয়ার্ডে, সেখানেও হেরে যায় বিজেপি। যা নিয়ে শাসকদলের মুখাপাত্রেরা প্রায়ই কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘সুকান্তকে আগে নিজের পাড়ায় জিততে বলুন, তার পর লোকসভা নিয়ে ভাববেন।’’

মঙ্গলবারের সরকারি সভা থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। যার অর্থমূল্য ২০০ কোটি টাকা। বালুরঘাট থেকেও ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন মমতা। বালুরঘাটের সভা শেষ হতে প্রায় বিকেল গড়িয়ে গিয়েছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রী ওই মঞ্চ থেকেই বুধবার বালুরঘাটের সব সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে ছুটি ঘোষণা করে দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাধ্যমিকের জন্য এমনিতেই বৃহস্পতিবার থেকে ছুটি পড়ার কথা ছিল। যে হেতু ছেলেমেয়েদের বাড়ি ফিরতে সন্ধে হয়ে যাবে, তাই কালকের দিনটাও ছুটি।’’

Mamata Banerjee BSF Sukanta Majumdar Lok Sabha Election 2024
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy