একটি রাজনৈতিক দলের সাপ্তাহিক মুখপত্রের গ্রাহক হতে হবে, দাবি করেছিলেন কয়েক জন যুবক। তা নিয়ে মতভেদ হওয়ায় বৈষ্ণবঘাটা পাটুলির এক ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠল। ১০-১২ জন যুবক তাঁকে মোটরবাইকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ওই রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে আটকে রেখেছিল বলে পাটুলি থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই ব্যবসায়ী। এই ঘটনায় ২৪ ঘণ্টা পরেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি ঢালাইব্রিজের কাছে ই এম বাইপাস লাগোয়া একটি বাজার রয়েছে। ওই বাজারের হকার সংগঠনের সম্পাদক এই ব্যবসায়ী গোপাল নস্কর। তাঁর অভিযোগ, সোমবার সকাল দশটা নাগাদ স্থানীয় চার যুবক এসে শাসক দলের সাপ্তাহিক পত্রিকার ২০০ কপি কিনতে হবে বলে দাবি করেন। পেশায় মাছ বিক্রেতা গোপালবাবু মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মাছ বিক্রি তখন সবে শেষ হয়েছে। আমি বলেছিলাম, এখনই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে পরে জানাব। আমাকে হুমকি দিয়ে ওঁরা চলে যান।’’
অভিযোগ, প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে ১০-১২ জন যুবক গোপালবাবুর কাছে আসেন। গোপালবাবুর কথায়, ‘‘আমি তখন বাজারের সেলুনে বসে দাড়ি কাটছিলাম। হঠাৎ ৩-৪ জন যুবক সেলুনে ঢুকে আমায় কিল, ঘুষি, চড় মারতে থাকে। আমাকে ওরা জোর করে বাইকে চাপিয়ে দলীয় অফিসে নিয়ে যায়।’’ অফিসে নিয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে জোর করে একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন গোপালবাবু।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সোমা মারিকের কথায়, ‘‘গোপালদাকে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পেতেই তাঁকে বারবার মোবাইলে ফোন করছিলাম। কিন্তু ফোন বেজে যাচ্ছিল।’’ পাটুলির কাছে একটি দলীয় কার্যালয়ে গোপালবাবুকে আটকে রাখা হয়েছে বলে পরে জানা গেলে বেলা একটা নাগাদ বাজারের প্রায় শ’দুয়েক ব্যবসায়ী গিয়ে গোপালবাবুকে উদ্ধার করে আনেন।
ব্যবসায়ী হেনস্থার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে এলাকায় মিছিল করেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। পরে রাতে তাঁরা পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাঁদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে তাঁরা আমাদের দলের সমর্থক। তবে সোমবার সকালে পাটুলি বাজারে এই ধরনের ঘটনার কথা আমার জানা নেই। তৃণমূলের এমন দুর্দিন আসেনি যে এই ভাবে জোর করে কাউকে দলীয় মুখপত্র কিনতে ফরমান জারি করতে হবে।’’
পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সোমবার পাটুলি বাজারে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy