ফাইল চিত্র।
এক-আধ দিন বা দু’-এক বার নয়। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বারবার অমান্য করা হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ। তাই এ বার রাজ্যের স্কুলশিক্ষা অধিকর্তার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করল উচ্চ আদালত। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নির্দেশ, আগামী ১৬ অগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁর আদালতে হাজির হতে হবে স্কুলশিক্ষা অধিকর্তা অবনীন্দ্রনাথ সিংহকে।
নিয়ম অনুযায়ী উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করলে স্কুলশিক্ষকদের বিধিবদ্ধ বর্ধিত হারে বেতন দেওয়ার কথা। মালদহের সুশান্ত মেমোরিয়াল বিদ্যাপীঠের ইতিহাসের শিক্ষক আলতাব হোসেন ২০০০ সালে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়িয়ে নেন। পরের বছর ওই শিক্ষক জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে আবেদন জানান, তিনি এমএ পাশ করেছেন। তাঁকে ‘হায়ার স্কেল’ অর্থাৎ উচ্চতর বেতনহার অনুযায়ী পারিশ্রমিক দেওয়া হোক। সেই আবেদন মঞ্জুর না-হওয়ায় ২০০৭ সালে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই শিক্ষক।
আলতাবের কৌঁসুলি এক্রামুল বারি জানান, সে-বছর ফেব্রুয়ারিতে বিচারপতি তপেন সেন ওই শিক্ষককে বাড়তি হারে বেতন দেওয়ার জন্য স্কুলশিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ কার্যকর না-হওয়ায় ২০১৫-য়ে ফের হাইকোর্টে মামলা করেন ওই শিক্ষক। বিভিন্ন শুনানিতে বিচারপতি বসাক স্কুলশিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দেন, বাড়তি বেতন দিতে হবে। তাতেও কাজ হয়নি। গত নভেম্বরে স্কুলশিক্ষা অধিকর্তাকে শেষ সুযোগ দেন ওই বিচারপতি। তিনি রাজ্যকে নির্দেশ দেন, যে-অফিসারের গাফিলতিতে ওই শিক্ষক বর্ধিত বেতনহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, প্রয়োজনে তাঁর বেতন থেকে টাকা কেটে শিক্ষকের বকেয়া মেটাতে হবে। তা-ও কার্যকর হয়নি।
৩ অগস্ট মামলাটি ফের ওঠে। আলতাবের আইনজীবী জানান, ওই দিন বিচারপতি সরকারি কৌঁসুলি পান্তুদেব রায়কে নির্দেশ দেন, ৪ অগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় স্কুলশিক্ষা অধিকর্তাকে আদালতে হাজির করাতে হবে। সেই সঙ্গে আনতে বলা হয় ওই শিক্ষকের বকেয়া টাকার চেক (১৮ শতাংশ সুদ-সহ)। কিন্তু ওই অধিকর্তা সে-দিনও আদালতে হাজির হননি। বিচারপতি বসাক তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই দিন জানিয়ে দেন, তিনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে শিক্ষা অধিকর্তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করছেন। ওই অফিসারকে ১৬ অগস্ট হাজির হতেই হবে।
এক্রামুল বুধবার জানান, ওই দিনও হাজির না-হলে আদালত স্কুলশিক্ষা অধিকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারে। তাঁর বক্তব্য, স্কুলশিক্ষা দফতর যদি আদালতের নির্দেশ আগেই মেনে নিত, তা হলে বকেয়া টাকা সুদ-সহ মেটাতে হতো না। এখন কয়েক লক্ষ টাকা বাড়তি দিতে হবে রাজ্যকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy