আসানসোলের সিবিআই আদালত চত্বরে অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: পাপন চৌধুরী।
গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে শনিবার আরও ১৩ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাঁকে ফের ১১ নভেম্বর আদালতে তোলা হবে। শনিবার বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, সিবিআইয়ের তদন্ত কবে শেষ হবে। উপযুক্ত তথ্য ছাড়া বারবার ধৃতের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করা যে সম্ভব নয়, সে কথাও তদন্তকারীদের স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। সিবিআইয়ের তরফে তখন জানানো হয়, এই প্রক্রিয়ায় আরও ৬০ দিন লাগবে।
এ দিন অনুব্রতের দুই আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা ও সঞ্জয় দাশগুপ্ত তাঁদের মক্কেলের জামিনের আর্জি জানান। তাঁরা আদালতে দাবি করেন, তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে ও তিনি প্রভাবশালী— এই তত্ত্বে অনুব্রতকে সিবিআই ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে জেল-বন্দি করে রেখেছে। ৭৯ দিন সংশোধনাগারে রয়েছেন অনুব্রত। সিবিআইয়ের ‘পিটিশনে’ বলা হয়েছে, অনুব্রত রাজ্যের শাসক দলের বীরভূম জেলা সভাপতি হওয়ায় তিনি সরকারি আধিকারিকদের কাছে পরিচিত। তাই তিনি তদন্ত প্রক্রিয়া প্রভাবিত করতে পারেন, সাক্ষীদের ভয় দেখাতে পারেন। অনুব্রতের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, তা হলে কি সিবিআই তাঁদের মক্কেলকে রাজনৈতিক শিবির পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে? তাঁদের অভিযোগ, চার্জশিট জমা পড়ার পরেও তদন্ত চলার কথা স্রেফ ‘অজুহাত’।
যদিও সিবিআইয়ের দুই আইনজীবী প্রিয়ব্রত দাস ও দীনেশ কুমার শিবির বদলের ইঙ্গিতের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানান। অনুব্রতকে আবারও ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে উল্লেখ করে তাঁরা দাবি করেন, তদন্ত চলছে। তাতে প্রভাব খাটাতে পারেন অনুব্রত। এর পরেই সিবিআইয়ের আইনজীবীদের বিচারক প্রশ্ন করেন, তদন্ত প্রক্রিয়া কবে শেষ হবে? ওই আইনজীবীরা জানান, যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ হবে। তখন বিচারকের প্রশ্ন, তার মানে কি পাঁচ বছর ধরে চলবে! চার্জশিট দেওয়ার পরেও উপযুক্ত যুক্তি ছাড়া কী ভাবে অভিযুক্তের জামিন না-মঞ্জুর করা সম্ভব, তা-ও জানতে চান বিচারক। সিবিআইয়ের আইনজীবীরা জানান, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত ৬০ দিন সময় লাগবে।
সিবিআই সূত্রের দাবি, এ দিন বেশ কিছু নতুন তথ্য ও ১৫ জন নতুন সাক্ষীর কথা আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে অনুব্রতের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, এর আগে যে ৯৫ জন সাক্ষীর নাম দিয়েছিল সিবিআই, তার মধ্যে ৮৪ নম্বরে থাকা মাধব কৈবর্ত ইতিমধ্যে মৃত। তাঁর বয়ান কোথা থেকে পেল সিবিআই? সিবিআই সূত্রের যদিও দাবি, মৃত্যুর আগে মাধবের বয়ান নেওয়া হয়।
শিবির বদলের ইঙ্গিতের দাবি প্রসঙ্গে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের দাবি, “কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বিজেপি যে কাজে লাগায়, দেশ জুড়ে নানা ঘটনাতেই তা স্পষ্ট। হয়তো সেটাই এ দিন বলা হয়েছে।” যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, “জামিন যাতে মঞ্জুর হয়, সে জন্য ওঁর আইনজীবীরা অজুহাত তৈরির চেষ্টা করেছেন। এমন পচা আলু বিজেপি-তে নেওয়া যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy