Advertisement
১১ মে ২০২৪
Supreme Court of India

Supreme Court of India: ‘অনুমতি ছাড়াই এফআইআর  সিবিআইয়ের’, কোর্টে বলল রাজ্য

রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। ওই তদন্তে সিবিআই নিয়মিত মামলা দায়ের করছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

এক দিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বললেন, ‘‘সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতর, এসএফআইও-সহ কোনও সংস্থাকে কাজে লাগানো হোক। কিন্তু তৃণমূল মাথা নত করবে না।’’ অন্য দিকে রাজ্য প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া সিবিআই পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক এফআইআর দায়ের করছে বলে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ে নামল রাজ্য সরকার।

ইডি-র দফতরে যখন অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তখনই আজ সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার অভিযোগ তুলেছে, সিবিআইয়ের তদন্তের সার্বিক অনুমতি তিন বছর আগে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সিবিআই মামলা দায়ের করে চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের বেঞ্চ অবশ্য এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিতে রাজি হয়নি।

রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। ওই তদন্তে সিবিআই নিয়মিত মামলা দায়ের করছে। কয়লা পাচার কাণ্ডে গত বছর সিবিআই এফআইআর দায়ের করার পরে প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাঝি সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলেছিলেন, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়াই সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। এখানে সিবিআইয়ের এক্তিয়ারই নেই। রাজ্য সরকারের আইনজীবীরাও এ বিষয়ে একই মত জানিয়েছিলেন। কারণ রাজ্য সরকার ২০১৮-র ১৬ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে সিবিআইকে রাজ্যে তদন্তের সার্বিক অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয়। সিবিআইকে প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে। সেই মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে।

এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন মামলায় সিবিআইয়ের এফআইআর করার বিরুদ্ধে (যেগুলির তদন্ত আদালতের নির্দেশে শুরু হয়েছে সেগুলি বাদে) রাজ্য সরকার অন্তর্বর্তী আবেদন করে। কিন্তু এই আর্জি কী ভাবে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হল, তা নিয়েই বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন। রাজ্যের আইনজীবী মুকুল রোহতগিকে বিচারপতি রাও বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য শোনার পরেই কোনও সুরাহার বন্দোবস্ত করা সম্ভব। কোনও এক তরফা নির্দেশ জারি করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রকে এ বিষয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহ পরে এ বিষয়ে শুনানি হবে।’’

কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই পাল্টা যুক্তিতে জানিয়েছিল, কয়লা পাচারের ক্ষেত্রে অপরাধের অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন রেলের এলাকায়। রাজ্যের এলাকায় তদন্ত করতে হলেই সিবিআইকে অনুমতি নিতে হবে। রেলের এলাকা ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নয়। কিন্তু আজ একই মামলায় ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের পরে অভিষেক বলেন, ‘‘যাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই সিবিআই-ইডিকে কাজে লাগানো হচ্ছে।’’

দিল্লি যাওয়ার আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বেআইনি কয়লা কারবারের কোনও যোগ প্রমাণিত হলে তিনি ফাঁসিতে যেতে প্রস্তুত। সোমবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ফাঁসি হবে না কি জেল, সেটা তো আর আমরা ঠিক করব না! তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। তাঁর কাছের লোকেরা ধরা পড়েছেন। তাঁরা নাম বলেছেন। ইডি ডেকেছে। আপনার দোষ না থাকলে কাগজপত্র দিন।’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘হাজিরা দিতে গিয়েছেন। এ বিষয়ে এজেন্সি বলতে পারবে। কেন ডেকেছে, সবাই তো সব বুঝতে পারছে। বাঁকুড়ায় দাঁড়িয়ে আছি, এখানে বালি ও কয়লায় কী হয়েছে, সকলে জানে।’’ অভিষেককে নিশানা করে দিলীপ বলেন, ‘‘আপনার ডান হাত বিনয় মিশ্র আজ কোথায়? তিনি এ দেশের নাগরিক নন। অথচ আপনার ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে বসে আছেন। অন্য দেশে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি আপনার খুব কাছে থাকতেন। তিনি যে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন, লোককে দিয়েছেন, সে সব তথ্য ইডি পেয়েছে। তাই তদন্ত হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE