সারদা বা রোজ ভ্যালির মতো নামডাক নেই তাদের। বস্তুত বহু লোকই তাদের নাম বড় একটা জানে না। কিন্তু সিবিআই বলছে, সারদা-রোজ ভ্যালির কায়দাতেই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় একশো কোটি টাকা তুলে ফেলেছে আসডা অ্যাগ্রো প্রজেক্ট লিমিটেড নামের এই সংস্থাটি। শুধু তা-ই নয়, নিজেদের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছে বেশ কিছু ‘প্রভাবশালী’র নামও।
সারদা-কাণ্ড ফাঁস হওয়ার পরেও আসডা’র কারবারে রাশ পড়েনি। বরং তা বেশ রমরম করেই চলছিল। শুক্রবার সংস্থার বিভিন্ন অফিস ও কর্তাদের বাড়ি মিলিয়ে আসডা’র মোট ১১টি ডেরায় সিবিআই হানা দিয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, তল্লাশিতে উদ্ধার হওয়া কাগজপত্রে একাধিক রাজ্যের মন্ত্রী-সাংসদের নাম রয়েছে। সংস্থার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ হলেন তৃণমূলের এক অভিনেত্রী-সাংসদ। কোম্পানির ব্রোশিওরে রাজ্যের এক মন্ত্রীর ছবি রয়েছে।
সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ রহস্য উন্মোচনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এখন খতিয়ে দেখছে, বিভিন্ন অবৈধ অর্থলগ্নি সংস্থার পিছনে প্রভাবশালীদের কোনও ভূমিকা ছিল কি না। ইতিমধ্যে সারদা-মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র, শাসকদল তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ, সদ্য প্রাক্তন সাংসদ সৃঞ্জয় বসু, তৃণমূলের সহ-সভাপতি রজত মজুমদার (শেষের দু’জন আপাতত জামিনে মুক্ত)। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তৃণমূলের সাংসদ মুকুল রায়, মিঠুন চক্রবর্তী, অর্পিতা ঘোষ এবং দলের প্রাক্তন ছাত্রনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডাকে। রাজ্যের আর এক মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তৃণমূলের আয়-ব্যয়ের হিসেবও সিবিআই-তদন্তের আওতায়। ওই হিসেবের ব্যাখ্যা চেয়ে তদন্তকারীরা সম্প্রতি দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুলবাবুকে চিঠি দিয়েছেন।