Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Sandeshkhali Incident

সন্দেশখালি-কাণ্ডে কী ভাবে আড়াল করা হয়েছিল মূল অভিযুক্তদের, তা আদালতে পেশ করতে চায় সিবিআই

গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার আকুঞ্জিপাড়ায় শাহজাহানের বাড়িতে রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় অভিযানের সময়েই ইডির তদন্তকারী অফিসার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৮:০২
Share: Save:

সন্দেশখালি-কাণ্ডে কী ভাবে আড়াল করা হয়েছিল মূল অভিযুক্তদের, কী ভাবে সাত জনকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, সে সব আদালতের সামনে পেশ করতে চায় সিবিআই। আর সেই লক্ষ্যেই তাদের হেফাজতে থাকা তিন জনের গোপন জবানবন্দি নিতে বৃহস্পতিবার বসিরহাট আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।

এই সাত জন এখন সিবিআইয়ের হেফাজতে রয়েছেন। পুলিশ যে সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল, তাঁরা ঘটনার দিন অকুস্থলেই ছিলেন না বলে দাবি করেছেন তাঁদের নিকট আত্মীয়েরাও। তাদের হেফাজতে এসে সে কথা ওই সাত জনও জানিয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।

এ বার গোপন জবানবন্দির আবেদনের সময়ে আদালতে জমা দেওয়া নথিতেও সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, মূলত নিজেদের পিঠ বাঁচাতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতারা ওই সাত জনকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ সরবেড়িয়া আগারহাটি পঞ্চায়েত প্রধান জিয়াউদ্দিন মোল্লা ও ফারুখ আকুঞ্জির নাম। তাঁদেরও পরে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই।

গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার আকুঞ্জিপাড়ায় শাহজাহানের বাড়িতে রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় অভিযানের সময়েই ইডির তদন্তকারী অফিসার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। ন্যাজাট থানায় ইডি-কর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এবং স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে করা পুলিশের একটি মামলা দায়ের হয়।

ওই মামলায় ন্যাজাট থানার পুলিশ সুকোমল সর্দার, মেহেবুব মোল্লা, সঞ্জয় মণ্ডল, আলি হোসেন ঘরামী, আনামুল শেখ, আইজুল শেখ ও হাজি নুর শেখকে গ্রেফতার করে। পরে তাঁদের নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, তাঁদের হেফাজতে এসে জেরায় ওই সাত জন একযোগে জানিয়েছেন, জিয়াউদ্দিনই তাঁদের ন্যাজাট থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। সিবিআইয়ের দাবি, হেফাজতে থাকা জিয়াউদ্দিন ও ফারুখের মুখোমুখি বসিয়ে ওই সাত জনকে জেরা করতেই বিষয়টা অনেকটা পরিষ্কার হয়। পরে ওই সাত জনের মোবাইল ফোনের অবস্থান জরিপ এবং আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

আদালতে জমা দেওয়া নথিতে তদন্তকারীদের দাবি, জিয়াউদ্দিন ও ফারুখ নিশ্চিত ছিলেন, পুলিশ তাঁদের কেশাগ্রও স্পর্শ করবে না। অন্য দিকে, সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে দেশ জুড়ে হইচই শুরু হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে চাপ বাড়তে থাকে। ঠিক হয়, ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে কয়েক জনকে গ্রেফতার করে মুখরক্ষা করতে হবে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, পুলিশের চাপ কমাতে এবং মূল অভিযুক্তদের সঙ্গে পুলিশ কর্তাদের ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ওই সাত জনকে গ্রেফতার করানো হয়। সিবিআইয়ের এক কর্তার দাবি, ওই মামলায় পুলিশের তদন্তকারী অফিসার বেশ কিছু প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBI Sandeshkhali Incident ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE