Advertisement
E-Paper

শান্তনুর দেওয়া কার্ডে যাতায়াত করতে পারবেন মতুয়ারা, আশ্বাস প্রতিমন্ত্রীর

মতুয়া সমাজের লোকজনের নাগরিকত্বের দাবি দীর্ঘ দিনের। কেন্দ্রীয় সরকার কয়েক বছর আগে সিএএ পাশ করলেও তার বিধি প্রণয়ন এখনও হয়নি। তার জেরে মতুয়াদের একাংশ ‘হতাশ’।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৯
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়কুমার মিশ্র টেনি।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়কুমার মিশ্র টেনি। ছবি: সংগৃহীত।

মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্য হিসাবে তাঁদের পরিচয়পত্র ছিলই। সেই পরিচয়পত্র নিয়ে মতুয়ারা দেশের যে কোনও প্রান্তে যাতায়াত করতে পারবেন বলে জানালেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়কুমার মিশ্র টেনি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে জটিলতার মধ্যে লোকসভা ভোটের আগে মতুয়াদের এই কার্ডকে এ হেন মান্যতা দেওয়া নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়েছে। রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের আগে সিএএ কার্যকর করতে পারবে না বুঝতে পেরে নতুন কার্ডের তত্ত্ব এনে বিজেপি ভাঁওতা দিচ্ছে।

মতুয়া সমাজের লোকজনের নাগরিকত্বের দাবি দীর্ঘ দিনের। কেন্দ্রীয় সরকার কয়েক বছর আগে সিএএ পাশ করলেও তার বিধি প্রণয়ন এখনও হয়নি। তার জেরে মতুয়াদের একাংশ ‘হতাশ’। এই পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়ের আশ্বাস, কেন্দ্র মতুয়াদের নাগরিকত্ব দিতে বদ্ধপরিকর। যত দিন না নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে, তত দিন মতুয়ারা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের দেওয়া কার্ড নিয়ে গোটা দেশে নির্ভয়ে ঘুরতে পারবেন।

রাস উৎসব উপলক্ষে রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি সিএএ চালু হয়ে গিয়েছে। নিয়ম-কানুন হচ্ছে। কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। সে সব সমাধান করার চেষ্টা করছি আমরা। তা ছাড়া, বিরোধী দল ও বিরোধী মনোভাবাপন্ন লোকজন সিএএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন। শুনানি আছে ৬ ডিসেম্বর। আপনাদের চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। শীঘ্রই আমরা নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু করব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘নাগরিকত্ব না পাওয়ার কারণে আপনাদের আধার কার্ড নেই। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কেন্দ্রের আয়ুষ্মান কার্ড নেই। আপনারা কেন্দ্রের অনেক প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমি শুনলাম, আপনারা যাত্রা করতে ঘাবড়ে যাচ্ছেন। আমি বলে যেতে চাই, আপনাদের দিকে আঙুল উঠবে না। শান্তনু ঠাকুর যে কার্ড আপনাদের দিচ্ছেন, সেই কার্ড নিয়ে যেখানে খুশি যেতে পারেন। ওই কার্ড আপনাদের সারা দেশে ঘোরার জন্য পর্যাপ্ত।’’ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর যুক্তি, নাগরিকত্ব না থাকায় মতুয়া সমাজের মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি আছে। একটা কার্ড থাকলে শনাক্ত করা যাবে, তাঁরা এই সমাজের সঙ্গে যুক্ত।

অজয়ের কথা সুর টেনে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু বলেন, ‘‘মন্ত্রীর এ কথা বলার উদ্দেশ্য, যত ক্ষণ না আমরা নাগরিকত্ব পাচ্ছি, তত ক্ষণ পর্যন্ত মতুয়াদের পরিচয়হানি হচ্ছে। জিআরপি (রেল পুলিশ), ডিআইবি (গোয়েন্দা বিভাগ) হেনস্থা করছে। অনেক জায়গায় মতুয়াদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। মতুয়া মহাসঙ্ঘের মাধ্যমে মতুয়াদের পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। কার্ড দেখলে সকলেই বুঝতে পারবেন, এঁদের জন্য সিএএ চালু হয়েছে।’’ সিএএ কার্যকর না হওয়া নিয়ে শান্তনু এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার সিএএ কার্যকর হতে দিচ্ছে না। তাই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে এই কার্ডের মান্যতা দিতে হচ্ছে।’’

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি সিএএ কার্যকর করতে পারবে না, সেটা বুঝতে পেরে লোকসভা ভোটের আগে ফের মতুয়াদের ভাঁওতা দিতে নতুন কার্ডের তত্ত্ব বাজারে আনছে।’’ বিশ্বজিতের আরও সংযোজন, ‘‘মতুয়াদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড আছে। তাঁরা ভোট দেন। ফলে, তাঁরা নতুন করে নাগরিকত্ব নিতে যাবেন কেন?’’ বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরের আবার তীর্যক মন্তব্য, ‘‘শান্তনুকে টাকা আয়ের একটা পথ করে দিচ্ছে কেন্দ্র!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও মন্তব্য, ‘‘মতুয়া হোন, বাংলায় উদ্বাস্তু বা অন্য যে কোনও মানুষ ভোটে দাঁড়াতে পারেন। শান্তনু নিজে মতুয়া হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন, কোন কার্ড তাঁর লেগেছিল? মতুয়ারা আর দশ জনের মতো সমান অধিকারে অধিকারী। সেটাকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি কিন্তু পারবে না।’’

Matua Ajay kumar Mishra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy