সুসম্পর্কের ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের, তবু নানা কারণে ভারতে ইদানীং চিন প্রসঙ্গে বিরূপতা বাড়ছে। বন্ধুত্বে আগের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনতে তাই তৎপর হয়েছে সে দেশের উপ-দূতাবাস।
চিনের বিরুদ্ধে এ দেশে ক্ষোভের কারণ— রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী আসন পাওয়ার প্রস্তাবে বাগড়া দিচ্ছে তারা। মাঝে মাঝেই হিমাচল প্রদেশ বা অরুণাচলপ্রদেশে ঢুকে পড়ে চিনের সেনারা। দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতের জাহাজ যাতায়াতেও আপত্তি এই পড়শি দেশের।
চিনের উপ-দূতাবাসের এক কর্তার কথায়, সে দেশের সম্পর্কে ক্ষোভের জন্য ভুল বোঝাবুঝিই দায়ী। নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের বিষয়ে চিনের যা অবস্থান, ব্রাজিল বা ইন্দোনেশিয়ার মতো ভারতের অনেক বন্ধু দেশেও একই কথা বলছে। তা হলো— চলো নিয়ম মেনে। কিন্তু অযথা শুধু চিনকেই দায়ী করা হচ্ছে।
কলকাতায় চিনের কনসাল জেনারেল মা ঝানউ-র কথায়, আলাদা দু’টি দেশ হওয়ায় নানা বিষয়ে আলাদা অবস্থান থাকতেই পারে। কিন্তু তার পরেও হাত ধরে এগিয়ে চলেছে দুই পড়শি দেশ। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ভারতে আসার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেজিংয়ে যান। তার পরে দু’দেশের সম্পর্ক মজবুত হয়েছে। মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে চিন থেকে বিনিয়োগ আসছে আগের থেকে অনেক বেশি। কিন্তু সাংস্কৃতিক পরিচয়টা না-থাকায় ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থেকে যায়। দোষারোপ বাড়ে।
এই উদ্দেশ্যেই ভারতে এই প্রথম কলকাতায় চিনা চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী করা হচ্ছে বলে জানালেন কনসাল জেনারেল। রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বাছাই করা সাতটি চলচ্চিত্র দেখানো হবে নন্দনে। মা জানান, এই ছবিগুলিতে আধুনিক চিনের সাধারণ মানুষের জীবন যাপনের সঙ্গে থাকছে ভারতের সঙ্গে সাংস্কৃতিক মিলের বিষয়টিও।
এর আগে জুনের ২৬ তারিখ কলকাতা রোয়িং ক্লাবে ড্রাগন নৌ-উৎসব উপলক্ষে অথেনটিক চিনা খাবার ও হস্তশিল্পের প্রদর্শনী হয়ে গিয়েছে। মা বলেন, ‘‘উৎসবে ‘মাঙ্কি কিঙ্গ’ নামে একটি চলচ্চিত্র দেখানো হবে, যা আদতে রামায়ণের হনুমানের গল্প। থাকছে এক সাপুড়ের কাহিনিও, ভারতে যাঁদের রাস্তা-ঘাটে দেখা যায়।’’ কনসাল জেনারেল জানান, কয়েকটি ছবিতে চিনের তরুণ প্রজন্মের যে সমস্যা ও দোলাচল দেখানো হয়েছে, একই সমস্যায় পড়েন এ দেশের ছেলেমেয়েরাও।
কিন্তু নয়াদিল্লি বা মুম্বইয়ের বদলে সাংস্কৃতিক প্রদর্শনের জন্য কলকাতাকে কেন বেছে নিল চিন?
সহাস্য মা-য়ের কথায়, কলকাতা ভারতের বৌদ্ধিক রাজধানী। বাংলার সঙ্গে চিনের যোগসূত্রও বহু দিনের। সম্পর্ক শোধরানোর প্রক্রিয়া তাই এখান থেকেই শুরু করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy