রেশনে নিম্নমানের চাল দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগটা ছিল করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের। যা শুনেই চটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানতে চান, জেলার খাদ্য নিয়ামক কে?
খাদ্য নিয়ামক দেবাশিস বিশ্বাস উঠে দাঁড়ালে মমতা তাঁর জবাবদিহি চান। জানতে চান, এই চাল ফুড কর্পোরেশনের পাঠানো নাকি স্থানীয় ভাবে কেনা? দেবাশিসবাবু জানান, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে চাল এসেছে। তার অনেকটাই খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, সেই চাল ফিরিয়ে না দিয়ে মানুষকে কেন দেওয়া হল? সরকার টাকা দিয়ে কেন পচা চাল কিনবে, সেই প্রশ্নও ছুড়ে দেন তিনি।
সোমবার কৃষ্ণনগর সার্কিট হাউসে প্রশাসনিক বৈঠকের বেশির ভাগটাই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন প্রায় বিরাট কোহালির মেজাজে। আলগা বল পেলেই সোজা বাউন্ডারির উপর দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে কাজ ঠিকঠাক হয়ে থাকলে প্রশংসাও করেছেন।
কাঠগড়ায়: প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নবাণের মুখে জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
রানাঘাটে দীর্ঘ দিন অসম্পুর্ণ পড়ে থাকা রবীন্দ্রভবন তৈরির জন্য টাকা চেয়েছিলেন পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়। ১১ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠিয়ে রেখেছেন তিনি। মমতা তাঁকে সোজা বলে দেন, এত টাকা লাগে না! দু’কোটির মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। পার্থবাবু জানান, ইতিমধ্যে ২ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তা হলে তো আর কোনও টাকাই দেওয়া হবে না।’’ কারণ, রবীন্দ্রভবন তৈরির জন্য কেন্দ্র কোনও টাকা দিচ্ছে না। একই ভাবে শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে অডিটোরিয়ামের জন্য টাকা চাইলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে শান্তিপুর স্টেডিয়ামের জমিতে দেড় কেটি টাকার মধ্যে কাজ সেরে ফেলতে বলেন।
আরও পড়ুন: পুলিশকে ভর্ৎসনা মমতার
শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য বিদেশে শান্তিপুরী তাঁতের চাহিদার কথা তুলে ধরে জানতে চান, এখানকার তাঁতশিল্পীরা ‘বিশ্ব বাংলা’র লোগো ব্যবহার করতে পারবেন কিনা? ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের কর্তারা তাঁকে জানান, তন্তুবায়দের ক্ষেত্রে ওই লোগো ব্যবহারের কিছু অসুবিধা আছে। কিন্তু রফতানি এবং বিপণনে সাহায্য করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের নির্দেশ দেন।
শান্তিপুর ও কালনার মাঝখানে ভাগীরথীর উপরে সাতশো কোটি টাকা খরচে সেতু তৈরির অনুমোদন মিলেছে। তার জন্য দুই পাড়ে জমি প্রয়োজন। তা মিললেই দ্রুত কাজ শুরু করা যাবে বলে রাজ্যের কর্তারা জানান। জমির অভাবে করিমপুরের বক্সিপুর ও ফাজিলনগরের সেতুর তৈরির কাজ থমকে। মমতা জানান, জমি না পেলে জোর করে কাজ হবে না। গণ্ডগোল না করে কতটা জমি পাওয়া যাচ্ছে, সেটাই দেখতে হবে।
পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়লেও প্রশংসা কোড়ান জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। একশো দিনের কাজ, সবুজসাথী-র সাইকেল বিলি, স্কুলে স্কুলে শিবির করে তফসিলি জাতি ও জনজাতির শংসাপত্র বিলি, তাদের এবং সংখ্যালঘুদের বৃত্তি দেওয়ার ব্যাপারে সাফল্যকে অভিনন্দন জানান তিনি। জেলার স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং গতিধারা প্রকল্পের দৌলতে পরিবহণ দফতরও প্রশংসিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy