ফাইল ছবি।
রাজ্যপাল নন, রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শীঘ্রই এ বিষয়ে বিধানসভায় বিল আনা হবে। মন্ত্রিসভার ওই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধীরা।এত দিন পদাধিকারবলে রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু জগদীপ ধনখড় রাজভবনের বাসিন্দা হওয়ার পর থেকেই নবান্ন-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত নিত্যদিনের বিষয় হয়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তরজা লেগেই ছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন সত্ত্বেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলমালের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া, কিংবা রাজ্যকে এড়িয়ে উপাচার্যদের বৈঠকে ডাকা এবং রাজ্যের তৎপরবর্তী পদক্ষেপ— রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সঙ্ঘাতে শিক্ষা ক্ষেত্রের ভূমিকাও তাৎপর্যপূর্ণ। গত বছর ডিসেম্বরেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আনা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। ছ’মাসের মধ্যে সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে গেল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রত্যাশিত ভাবেই এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা এসেছে বিরোধী শিবির থেকে।
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শাসকদলের মালিকানা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। সমস্ত ক্ষেত্রে তাঁরই ক্ষমতা। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও যে তাঁরই মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত হবে, সেটাই স্বাভাবিক। এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্তও তারই নমুনা। এর পর যদি রাজ্যপাল অনুমোদন না দেন, তা হলে বলা হচ্ছে অর্ডিনান্স জারি করা হবে। ফলে এই মুহূর্তে শিক্ষাব্যবস্থার যে কঙ্কালসার চেহারাটা মানুষের সামনে বেরিয়ে পড়েছে, প্রত্যেকটি স্তরে যে ভাবে প্রতিদিন দুর্নীতি সামনে চলে আসছে, সেখান থেকে মানুষের দৃষ্টিকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি অভিনব পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, এঁরা নিজেদের একটি স্বাধীন অঙ্গরাজ্য হিসেবে ভাবতে শুরু করেছেন। তাই সাংবিধানিক প্রধানকে মানেন না।’’
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সবই যখন তিনিই কন্ট্রোল করছেন, উপাচার্যরা তা হলে কেন তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবেন? আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ে যোগ্য আর কে আছেন! শিক্ষা জগতে তাঁর চেয়ে বেশি শিক্ষিত আর কে হবেন। আসলে মুখ্যমন্ত্রীর কাজ কম পড়ে গিয়েছে, সময় অনেক বেশি। একাধিক দফতরেরও মন্ত্রী তিনি। তাই কলুষতার যতটুকু বাকি আছে, সেটাও করে ফেলো। শিক্ষা দফতরকে কলুষতার আখড়া তৈরি করো, এটাই তাঁর লক্ষ্য। অত্যন্ত দুর্ভাগ্য আজ বাংলার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy