Advertisement
E-Paper

নথি দখলের চেষ্টা চলছে?

সংশ্লিষ্ট একাধিক মহলের অভিযোগ, পিনকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল এ বছর ফেব্রুয়ারিতে। তার পর ন’মাস কেটে গেলেও বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাটির অফিসে তল্লাশিই চালায়নি তদন্তের দায়িত্বে থাকা রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা (ইওডব্লিউ)।

শিবাজি দে সরকার

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৮

সারদা-রোজভ্যালি কাণ্ডের ছায়া পিনকন গোষ্ঠীর তদন্তেও পড়ছে বলে অভিযোগ উঠে গেল এ রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক মহলের অভিযোগ, পিনকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল এ বছর ফেব্রুয়ারিতে। তার পর ন’মাস কেটে গেলেও বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাটির অফিসে তল্লাশিই চালায়নি তদন্তের দায়িত্বে থাকা রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা (ইওডব্লিউ)। কিন্তু প্রতারণার মামলায় ওই গোষ্ঠীর কর্ণধার মনোরঞ্জন রায়কে রাজস্থান পুলিশ গত সপ্তাহে গ্রেফতার করার পরে হঠাৎই তৎপর হয়ে বুধবার রাতে অভিযুক্ত সংস্থার রেড ক্রস প্লেসের অফিস সিল করে দিয়েছে ইওডব্লিউ। তার পরেই অভিযোগ উঠেছে, রাজস্থান পুলিশ যাতে ওই অফিসে ঢুকে তল্লাশি চালাতে না পারে, সে জন্যই এটা করেছে ইওডব্লিউ। এর আগে, ঠিক একই কায়দায় সারদা তদন্তের সময় কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি যাতে কোন রকম তথ্য না পায়, সে জন্য সারদা গোষ্ঠীর একটি ব্যাঙ্কের লকার সিল করে দিয়েছিলেন বিধাননগর পুলিশের কর্তারা। রোজভ্যালি কাণ্ডের তদন্তেও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি যাতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নথি না হাতে পায়, সে জন্য আলাদা ভাবে তদন্ত শুরু করে বহু নথি আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে।

পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি থানায় দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পিনকনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইওডব্লিউ। কিন্তু গত সপ্তাহ পর্যন্ত সেই মামলায় কোন রকম অগ্রগতি হয়নি বলেই অভিযোগ। এর মধ্যেই ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশে গত মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পূর্ব মেদিনীপুরেরই বাসিন্দা কলিমুদ্দিন রহমান নামে এক ব্যক্তি মনোরঞ্জন রায়-সহ পিনকন সংস্থার ন’জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণার মতো একাধিক ধারায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে।

মনোরঞ্জন গ্রেফতার হওয়ার পরে হেয়ার স্ট্রিট থানা তদন্তকারী কর্তারা বলছেন, এখন পিনকন-কর্তাকে জেরা করতে চান তাঁরা। তার জন্য নথি সংগ্রহের কাজও শুরু হয়েছে। পুলিশেরই একাংশের অভিযোগ, এ ভাবে পিনকনের সমস্ত নথি নিজেদের কব্জায় নিতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। যাতে রাজস্থান পুলিশ বিশেষ কোনও তথ্য হাতে না পায়। রাজ্য প্রশাসনেরও একাংশের মতে, এই তৎপরতা আসলে গোটা তদন্ত গুলিয়ে দিতে। এর মধ্যেই একটি সূত্রের দাবি, পিনকনের সব অভিযোগের তদন্ত ইওডব্লিউ-কে দেওয়া হতে পারে।

পুলিশের শীর্ষ কর্তারা অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছেন, তদন্ত একদম প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। যদিও নিচুতলার পুলিশকর্মীদের অভিযোগ, পিনকন গোষ্ঠীর সঙ্গে শাসকদলের ঘনিষ্ঠতা সকলেই জানেন। সেই সঙ্গে পুলিশের বড় একটি অংশেরও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে পিনকন-কর্তার সঙ্গে। যা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন রাজস্থান পুলিশের তদন্তকারীরা। রাজ্য পুলিশের এক বড় কর্তার কথায়, ‘‘নেতা থেকে মন্ত্রী এমনকী পুলিশের অনেক কর্তাও মনোরঞ্জনের থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধে পেয়েছেন। বিনিময়ে তাঁরা পিনকনকে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার ব্যবসা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলতে সাহায্য করেছেন।’’

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, মনোরঞ্জন রায় বিভিন্ন নামে সংস্থার তিনটি ভুয়ো অফিস খুলেছিল। রেড ক্রস প্লেস, ডেকার্স লেন, শেক্সপিয়র সরণী-সহ তিনটি অফিসই বর্তমানে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

Pincon Group Corruption পিনকন গোষ্ঠী EOW
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy