—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের প্রচারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটেও তাঁরা বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করবেন। কিন্তু লোকসভা ভোটে স্বয়ং অধীরের হারের দু’সুপ্তাহের মধ্যেই বদলে গেল পরিস্থিতি! আসন্ন চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বাগদা (সংরক্ষিত) আসন কংগ্রেসকে না ছাড়া হলে তাঁরা চারটি আসনেই প্রার্থী দিতে বাধ্য হবেন বলে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। বাম সূত্রের খবর, চিঠি পেয়ে বিমানবাবুর তরফে আলোচনার প্রস্তাবও কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। এমতাবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় বামফ্রন্টের জরুরি বৈঠকে ঠিক হল, বাগদা আসনে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্তই আপাতত বহাল থাকবে। বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে এআইসিসি-কেও। কংগ্রেস এর পরে আলোচনা চাইলে কথা হবে।
বিমানবাবুকে লেখা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির চিঠির বয়ানেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাম নেতৃত্ব। তাঁরা অধীরের চিঠিকে জোট ভাঙার ‘হুঁশিয়ারি’ হিসেবেই দেখছেন। উপনির্বাচনে রায়গঞ্জ আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ ও মানিকতলা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। কিন্তু বিতর্ক বেধেছে ফ ব-কে দেওয়া বাগদা নিয়েই। লোকসভা ভোটেও কোচবিহার ও পুরুলিয়া কেন্দ্রে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল কংগ্রেস এবং ফ ব। এক দিকে যেমন বিমানবাবুর অনুরোধ সত্ত্বেও কংগ্রেস কোচবিহার থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করেনি, তেমনই ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিস্তর তোপ দেগেছিলেন। সেই ‘তিক্ততা’র জেরই উপনির্বাচনে এসে পড়ছে। রাজ্যে গত ২০১৬ ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা আসন কংগ্রেসকে ছেড়েছিল বামেরা। এ বার লোকসভা ভোটেও বনগাঁ কেন্দ্রে (যার অধীনে বাগদা বিধানসভা) কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল। সেই যুক্তিতে বাগদায় তাদেরই প্রার্থী দেওয়া উচিত বলে প্রদেশ কংগ্রেস মনে করছে। বাগদা না ছাড়লে চার আসনেই লড়াইয়ের ‘অপ্রীতিকর’ সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে বামফ্রন্টকে জানিয়েছেন অধীর। আবার ফ ব আগে দীর্ঘ দিন বাগদায় লড়েছে, এই বিবেচনায় আসনটি তাদের ছেড়েছে বামফ্রন্ট। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এ দিনের বৈঠকে ফ্রন্টের সিদ্ধান্ত বদলের পক্ষে কোনও শরিক দলই মত দেয়নি।
সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, সদ্য লোকসভা নির্বাচনে বাগদা বিধানসভা এলাকায় বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ বিশ্বাস পেয়েছিলেন চার হাজার ৮৩৯ ভোট। দু’পক্ষের সম্মিলিত ভোটের এই যেখানে হাল, সেখানে উপনির্বাচনে কে লড়বে, তা-ই নিয়ে টানাপড়েন অর্থহীন! তা ছাড়া, বাংলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিজে হেরে যাওয়ার পরে তাঁর উপরে বাড়তি চাপ এবং এআইসিসি-র মনোভাবও বিবেচনায় রাখতে হবে বলে সিপিএমের ওই অংশের মত। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘পরিস্থিতির নিরিখে একটু বুঝেশুনে চলাই ভাল। বারবার ফ ব-কে নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, এটাও তো দেখা যাচ্ছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy