টানাপড়েন চলছিল গত পুরভোটের সময় থেকেই। তার পরে জট প্রায় কেটে গিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন সোমবার জানিয়ে দিয়েছে, হাওড়া পুর কর্পোরেশন বা নিগমের সংযোজিত ১৬টি ওয়ার্ডে আগামী ৩ অক্টোবর ভোট করা সম্ভব নয়।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় এ দিন জানান, হাওড়া পুর নিগমের সঙ্গে বালি পুরসভার সংযুক্তির ফলে ১৬টি ওয়ার্ড বেড়েছে। কিন্তু সেখানে ভোট করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন হয়নি। তাই কমিশন ওই ওয়ার্ডগুলি সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজে হাত দিতে পারছে না। সীমানা পুনর্বিন্যাস হলেই হবে না। তার পরেও কোন কোন ওয়ার্ড সংরক্ষিত হবে, তা ঠিক করার জন্য সময় দরকার। ‘‘এই সব কাজ করতে আইন অনুযায়ী ৯০ দিন সময় লাগে। সেই সময় সংক্ষেপ করলেও অন্তত ৪৫-৫০ দিন সময় লাগবেই। তাই ৩ অক্টোবর ওই ১৬টি ওয়ার্ডে ভোট করা সম্ভব নয়,’’ বললেন সুশান্তবাবু।
পশ্চিমবঙ্গ পুর নির্বাচনী আইনের সংশোধন চেয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের পুর দফতরকে চিঠি দিয়েছে কমিশন। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনের কোনও খবর তাঁদের কাছে আসেনি বলে সুশান্তবাবু এ দিন জানান। কমিশন সোমবারেই রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চায়, এই ব্যাপারে কোনও অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছে কি না। রাজভবন জানিয়েছে, ওয়ার্ড সংযুক্তির বিষয়ে অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছে ১ জুলাই। কিন্তু পুর নির্বাচনী আইন সংশোধনের অর্ডিন্যান্স জারি হয়নি।
দু’সপ্তাহ আগে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম জানিয়েছিলেন, ওই ১৬টি ওয়ার্ডে ভোট করার জন্য রাজ্য সরকার আইন সংশোধন করে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, এর পর থেকে কোনও পুরসভা বা পুর নিগমের সঙ্গে নতুন এলাকা যুক্ত হলে নতুন ওয়ার্ডগুলির ভোটকে উপনির্বাচন হিসেবে গণ্য করা হবে। কিন্তু কমিশন সূত্রের খবর, রাজভবন থেকে মন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমর্থন মেলেনি। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, দলগত ভাবে এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পুরমন্ত্রী ইস্তানবুল সফর সেরে ফিরলে এই নিয়ে কথা হবে।
সুশান্তবাবু জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ৩ অক্টোবর পুনর্গঠিত আসানসোল ও বিধাননগর পুর নিগমের ভোট হবে। ওখানে ওয়ার্ড বিন্যাস শেষ। এখন সংরক্ষণের কাজ চলছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
কিন্তু এ দিনই আসানসোলে নতুন ভাবে তৈরি এলাকা পুনর্বিন্যাসের তালিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রশাসনিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান বিরোধীরা। রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও কুলটি পুর এলাকাকে আসানসোলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে বিভিন্ন দলের মত জানতে ২৮ জুলাই বৈঠক করে প্রশাসন। এ দিন ১০৬টি ওয়ার্ডের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও বিজেপি স্লোগান দিতে দিতে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যায়। তাদের অভিযোগ, এমন ভাবে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে, যাতে শাসক দলই সুবিধা পায়।
আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, সব দলের অভিযোগ খতিয়ে দেখেই কমিশন চূড়ান্ত তালিকা করেছে। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানুষের সমর্থন পাবে না বুঝেই ওরা বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy