প্রতীকী ছবি।
করোনা অতিমারি সামাল দিতে ঢেলে সাজানো হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। সে জন্য কিনতে হয়েছে নানা ধরনের যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম। কিন্তু আপৎকালীন অবস্থায় আর্থিক নিয়ম মেনে কেনাকাটা করা সম্ভব নয়। তাই এ ক্ষেত্রে দরপত্র-বিধি শিথিল করেছে অর্থ দফতর। সেই ফাঁক দিয়ে করোনা-কেনাকাটায় অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। কিছু কিছু অভিযোগ গুরুতর।
নবান্ন সূত্রের খবর, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। গত পাঁচ মাসের করোনা সংক্রান্ত সমস্ত কেনাকাটা নিয়ম মেনে হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখে কমিটি মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে। অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা কেনাকাটায় অনিয়ম এবং গুটিকয়েক সংস্থার কাছ থেকে সরঞ্জাম কেনার বহু অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে এসেছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী নিজে নোট পাঠিয়ে স্বাস্থ্যসচিবের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছিলেন। তার পরেই কমিটি তৈরি করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সরকার সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় প্রতিদিন বিপুল টাকার সরঞ্জাম কিনতে হচ্ছে। অর্থ দফতরের হিসেব অনুযায়ী, করোনা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করেছে সরকার। যার বেশির ভাগটাই খরচ হয়েছে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি দফতরের জন্য স্যানিটাইজ়ার, বিভিন্ন ধরনের, মাস্ক, পিপিই, ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন কেনা, সেফ হোম তৈরির পরিকাঠামো, বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণ, নমুনা পরীক্ষা ইত্যাদি খাতে।
গত পরশুর করোনা বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে এ পর্যন্ত ২১ লক্ষ পিপিই, ১৫ লক্ষ ৬৬ হাজার এন-৯৫ বা এফএফপি২ মাস্ক, ৭০ লক্ষের বেশি অন্যান্য মাস্ক, ৪০ লক্ষের বেশি গ্লাভস এবং আড়াই লক্ষ লিটার স্যানিটাইজ়ার হাসপাতালগুলিতে পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজের উদ্যোগে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরকে দিয়ে পকেট স্যানিটাইজ়ার তৈরি করিয়েছেন।
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এখন দৈনিক ৩২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। তার জন্য কিনতে হচ্ছে কিট। অক্সিজেন, ওষুধপত্র, হাসপাতাল শয্যা-সহ অন্যান্য সরঞ্জামও কেনা হয়েছে। তৈরি হয়েছে ৫৮২টি সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্র, ২০০টি সেফ হোম। ২৯টি সরকারি ও ৫৫টি বেসরকারি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।।
মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশন এবং তন্তুজের মাধ্যমে করোনার কেনাকাটা হচ্ছে। কিছু সামগ্রী স্বাস্থ্যভবন থেকেও সরাসরি কেনা হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরঞ্জামের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেমন, নমুনা পরীক্ষার কিট বা পিপিই-র মান ভাল নয় বলে সরব হন চিকিৎসকদের একাংশ। শাসক দলের কয়েকটি সূত্র থেকেও অভিযোগ এসেছে সরকারের কাছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy