ডাইনি অপবাদে অত্যাচার ও পিটিয়ে মারা আটকাতে রাজ্য সরকারকে বিশেষ দল (সেল) গড়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পশ্চিম মেদিনীপুরের এক মহিলার উপরে এই ধরনের অত্যাচারের প্রেক্ষিতে গত বছর হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়। সেই মামলার সূত্রে সম্প্রতি ওই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী।
আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বাসিন্দা তাঁর মক্কেলকে ডাইনি অপবাদে মারধর করে ছেলেমেয়ে-সহ গ্রামছাড়া করে স্থানীয়রা। তাঁর বাড়ি ভাঙা হয়, চাষের খেত নষ্ট করে দেওয়া হয়। অভিযোগ জানিয়েও লাভ না হওয়ায় গত অক্টোবরে কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। জেলা পুলিশ ওই মহিলাকে পুলিশ প্রহরায় বাড়ি ফিরিয়ে এনেছে। নীলাঞ্জন জানান, কিন্তু এই ধরনের ঘটনা বন্ধের কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য। এ নিয়ে প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশায় পৃথক দণ্ডবিধি রয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যে নেই। সরকারি কৌঁসুলি শুভব্রত দত্ত-ও জানান, এই ধরনের অত্যাচার হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, বধূ নির্যাতনের ধারায় মামলা করা হয়।
দু’পক্ষের সওয়াল শেষে বিচারপতি রাজ্যকে একটি কমিটি গড়তে বলেন। কমিটিতে প্রশাসনিক কর্তা ছাড়াও সমাজবিজ্ঞানী এবং অন্য বিশেষজ্ঞেরা থাকবেন। আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা-সহ বিভিন্ন এলাকায় এখনও এমন ঘটনা কেন ঘটছে, কত জনকে পিটিয়ে মারা হয়েছে, তা সবিস্তার জানিয়ে রাজ্যকে ছ’মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে ওই কমিটি। তার ভিত্তিতে রাজ্য সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে বিশেষ দল গড়বে। পুলিশ ও গোয়েন্দাকর্মীদেরও ওই দলে রাখা হবে। ওই দল জেলায় জেলায় ঘুরে ঘুরে নজরদারি চালাবে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করবে। আক্রান্তের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy